সিসাল ফাইবার কি?
সিসাল এক প্রকার Leaf ফাইবার। যা “ক্যাকটাস” গাছের মত এক প্রকার গাছের পাতা থেকে সংগ্রহ করা হয়। আর এই গাছ আমেরিকা, আফ্রিকা, পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ ও ফ্লোরিডায় জন্মে।এ গাছের পাতাগুলো সোজা অনেকটা তলোয়ারের মতো। সিসাল ফাইবারের রং হলদে বর্ণের হয়। সিসাল ফাইবার চাষাবাদের জন্য জমি ভালভাবে চাষ দিয়ে আলাদা করে নিতে হয়।
সিসাল ফাইবার |
জমি তৈরির উপযুক্ত সময়ে। সারিবদ্ধভাবে অথবা এলোমেলোভাবেও বীজ বপন করা যায়। তবে কখনো কখনো চারা গাছও রোপন করা যায়। সাধারণত ৩ থেকে ৪ ফিট দূরে দূরে চারা রোপণ করা হয়।
সিসাল গাছের পাতাগুলো বেশ লম্বা হয় এবং অনেক জায়গা দখল করে। চাড়া ঘন হলে নিড়ানি দ্বারা পাতলা করে নিতে হয়। মাঝেমাঝে জমিতে সার প্রয়োগ করতে হয়।
সিসাল এর বৈজ্ঞানিক নাম?
সিসাল এর বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে Agave sisalana এছাড়াও সিসাল এর প্রজাতি নাম হচ্ছে আ. সিসালা।সিসাল ফাইবারের ইতিহাস?
প্রাচীন মেক্সিকান এর অ্যাজটেক(Aztec) সম্প্রদায়দের পরিধানের জন্য সিসাল নামক আঁশ থেকে তৈরি কাপড় ব্যবহার করা হত। যা একধরনের গাছের পাতা থেকে সংগৃহীত করা হয়েছিল।গাছটি মধ্য আমেরিকার স্বকীয় মেক্সিকো উপসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত ইউকাটন শহরের সিসাল বন্দরের নাম অনুসারে এই আঁশটির নাম হয়েছে সিসাল।
সিসাল ফাইবার এর গুণাগুণ?
সিসাল ফাইবার মসৃণ ও সোজা। এটির রং হালকা হলুদ। এটি লবণ পানিতে সহজেই নষ্ট হয়।
সিসাল চাষ পদ্ধতি?
সিসাল গাছে ৬ থেকে ৭ বছরের মধ্যে ফুল আসে। ফুল ফোটার সময় গাছের উচ্চতা ২০ ফুটের মত হয়। এ গাছে ফুল যখন ঝড়ে যায় তখন ঝড়ে যাওয়া ফুলের বোঁটায় ছোট ছোট অংকুর দেখা যায়।যা পরে ছোট চারা গাছে পরিণত হয়। আর এই চারা গুলো এক সময় মাটিতে ঝড়ে পড়ে মাটিতে গাছ জন্মায় এবং পরে মাতৃ গাছটি মারা যায়। চারা গাছ প্রয়োজনে অন্য জায়গায় নিয়ে রোপণ করা যায়।
সিসাল গাছ প্রায় ভূমি সমতল থেকে শুরু করে সারা জীবনে প্রচুর পরিমাণে পাতা দেয়। গাছের বয়স আড়াই থেকে চার বছর বয়স পর্যন্ত পাতা সংগ্রহ শুরু হয়। এবং নির্দিষ্ট সময় পরপর গাছ মারা না যাওয়া পর্যন্ত পাতা পাওয়া যায়।
একটি ভাল মানের সিসাল গাছ সারা জীবনে ৪০০ এর মত পাতা দেয় এবং প্রতি পাতায় প্রায় ১০০০টি আঁশ থাকে। পরিপক্ক পাতা কেটে মেশিন দ্বারা আঁশ থেকে প্রয়োজনীয় জলীয় পদার্থ দ্বারা আলাদা করা হয়। পরে তা ধুয়ে রোদের মধ্যে শুকানো হয়।
সিসাল ফাইবারের উপাদান?
- সেলুলোজ= ৭১.৫%
- হেমি সেলুলোজ= ১৮.০%
- লিগনিন= ৬%
- পেকটিন= ২.৩%
- ফ্যাট এন্ড ওয়াক্স= ০.৫%
- লিকুইড পদার্থ= ১.৭%
- মোট= ১০০%
সিসাল গাছের বর্ণনা?
সিসাল গাছের আগাভা সিসালানা তলোয়ার আকৃতির। এর লম্বা পাতা দৈর্ঘ্য ১.৫ থেকে ২ মিটার হয়ে থাকে। এছাড়াও এ গাছ ৪.৯ থেকে ৬.৬ ফুট নকশাকৃত হয়। এ গাছের কচি পাতার কিনার ধরে অনেক দাঁতের মত আছে।কিন্তু গাছে পরিপক্ক হলে এগুলো হারিয়ে যেতে পারে। একটি সিসাল উদ্ভিদ ৭ থেকে ১০ বছরের জীবন লাভ করে থাকে। সাধারণত বাণিজ্যিকভাবে প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ৪০০টি পাতার উৎপাদন করা হয়ে থাকে।
এছাড়াও প্রতিটি গাছের পাতা থেকে প্রায় ১০০০ তন্তু গড়ে ওঠে। সিসাল গাছ ২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এবং রোদে উৎপাদন ভাল হয়। সিসাল গাছকে ক্রান্তীয় এবং উপ-ক্রান্তীয় হিসাবে গণ্য করা হয়।
সিসাল ফাইবারের ব্যবহার?
- উন্নতমানের দড়ি, কাছি, টোয়াইন, উন্নতমানের ব্রাশ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
- ঘোড়ার লেজের পশমের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- জুতার ব্রাশ তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হয়।
- হেম্প এর সাথে মিশ্রিত করে ব্যবহার করা যায়।
- ব্যবহৃত হয়।