প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও উদাহরণ

প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও উদাহরণ


প্রতিবেদন লেখার নিয়ম জানা থাকলে শিক্ষা জীবন থেকে শুরু করে কর্ম জীবন, সর্ব ক্ষেত্রেই সবার চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে থাকতে পারবেন।  তবে নিয়মিত লেখার প্রয়োজন পড়েনা বলে বেশির ভাগ লেখকই প্রতিবেদন লেখার নিয়ম কিংবা ফরম্যাট নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েন। দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ার যথেষ্ট কারণও রয়েছে, বিষয় সাপেক্ষে প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও ফরম্যাট পরিবর্তন হয়, তাই প্রতিবেদন লেখার কৈাশল মনে রাখা বেশ কষ্টস্বাধ্য বটে।


প্রতিবেদন লেখার নিয়ম 



নির্দিষ্ট কোনো বিষয় বা ঘটনা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যসংবলিত অনুসন্ধান ভিত্তিক বিবরণীকে প্রতিবেদন বলে, এর ইংরেজি প্রতিশব্দ Report। আর যিনি প্রতিবেদন রচনা করেন, তাকে বলা হয় প্রতিবেদক।স্থান,কাল,পাত্র ভেদে আপনার বিভিন্ন ধরনের প্রতিবেদন লেখার প্রয়োজন হতে পারে। যেমন ছাত্রবস্থায় যেসব প্রতিবেদন লেখার নিয়ম জানা থাকাটা জরুরী, 


  • প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন।

  • এসাইনমেন্ট প্রতিবেদন

  • শিক্ষা সফর প্রতিবেদন। 

  • সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম।


প্রফেশনাল সেক্টরে গিয়ে যেসব প্রতিবেদন লেখার নিয়ম জানা থাকাটা জরুরি হতে পারে, 

  • রাজনৈতিক প্রতিবেদন।

  • সাংবাদিক প্রতিবেদন।

  • তদন্ত প্রতিবেদন। 

  • নমুনা প্রতিবেদন। 

  • ঘোষণা প্রতিবেদন।

  • সংবাদপত্রের কলাম প্রতিবেদন।

  • বৃক্ষরোপণ প্রতিবেদন।

  • বিদ্যালয় প্রতিবেদন। 

  • সাক্ষাৎকারভিত্তিক প্রতিবেদন।


আর্টিকেলের বাকি অংশে উপরে উল্লেখিত এসব প্রতিবেদন লেখার নিয়ম অনুযায়ী ফরম্যাট ও নমুনা দেখানো হলো। 




সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম



সাধারণত, সংবাদপত্র বা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের উপযোগী তথ্য সমৃদ্ধ সহজ সরল ভাষায় সংবাদের পরিবেশনকে বলা হয় প্রতিবেদন। সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে সহজ-সরল ও প্রাঞ্জল ভাষায় সঠিক তথ্য দিয়ে শিরোনামের বিষয়টি সম্পর্কে পাঠক-কে একটি সুস্পষ্ট ধারনা দিতে হয়।



সংবাদ প্রতিবেদনের বেসিক কাঠামো: প্রতিবেদনের প্রকৃতি নির্ধারণ করতে হবে প্রথমে সে অনুযায়ী লেখাটি পত্রিকার কোন পাতাতে যাবে, যেমন ক্রীড়া, জাতীয় বা বিনোদন ইত্যাদি।

প্রতিবেদনের বিষয় বা যে ধরনের প্রতিবেদন তা লিখতে হবে।সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের জন্য সবার আগে একটি সুন্দর শিরোনাম নির্বাচনের দরকার হয়,কেননা শিরোনামটি খুবই গুরুত্ব বহন করে। 


★খবরের মূল কথাটি আকর্ষণীয় অর্থে শিরোনামের মাধ্যমেই প্রকাশ পায়। একজন পাঠক সংবাদটি পড়বেন কিনা তার সেই সিদ্ধান্ত নির্ভর করে শিরোনামের উপর। তাই শিরোনামটি আকর্ষণীয় তবে সংক্ষিপ্ত আকারে মূলভাব প্রকাশ করে এমন হতে হয়। 


★শিরোনাম লেখা হলে আসে প্রতিবেদকের সংক্ষিপ্ত পরিচয়, এই অংশে প্রতিবেদকের নাম বা পদবী। এরপর ঘটনা অথবা প্রতিবেদন তৈরির স্থান লিখতে হয়। 


★তারপরে ভূমিকা অংশে  দুই-তিন লাইনের মধ্যে ঘটনার একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিতে হয়, এরপরই যেতে হয় বিস্তারিত আলোচনায়।


★কোন সূত্র থেকে প্রতিবেদনটি লেখা হচ্ছে সেটিও উল্লেখ করতে হবে।   


★ব্যক্তিনামের পরিবর্তে পদমর্যাদা, যেমন: সচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অথবা সাধারণ পরিচয় যেমন: বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা, কারখানার শ্রমিকেরা কিংবা ভুক্তভোগী এলাকাবাসী বা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি ইত্যাদি ব্যবহার করতে হয়।


★সংবাদ প্রতিবেদনে অবশ্যই স্থান, কাল ইত্যাদি তথ্য যথাযথভাবে দিতে থাকতে হবে।


★ প্রতিবেদন লেখা শেষ হলে "নিজস্ব প্রতিবেদক, দৈনিক নয়া দিগন্ত। (যে পত্রিকায় লেখাটি যাবে)

 


অন্য পোস্টঃবাবার সম্পত্তি ভাগের নিয়ম 


প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও উদাহরণ



একজন প্রতিবেদকের দায়িত্ব হল কোন ঘটনা, তথ্য বা বক্তব্য সম্পর্কে সর্বোচ্চ তথ্য-উপাত্ত, সিদ্ধান্ত, ফলাফল ইত্যাদি খুঁটিনাটি অনুসন্ধানের পর বিবরণী তৈরি করে কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষের বিবেচনার জন্য পেশ করা। প্রতিবেদন লেখার সময় যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হল, প্রতিবেদনটি অবশ্যই নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে লিখতে হবে।


অন্য ভাষায় বললে, প্রতিবেদন হচ্ছে কয়েকটি সুসংগঠিত তথ্যগত বিবৃতি যা কোন বক্তব্য সম্বন্ধে সংক্ষিপ্ত হলেও তা সঠিক বর্ণনা বিশেষ। একে যথেষ্ট সতর্কতা, পর্যবেক্ষণ, পর্যালোচনা, গবেষনা ও বিচার বিশ্লেষণের পর লিখতে হয়।প্রতিবেদনের মাধ্যমে চেষ্টা করা হয়, কোন বিষয়ে সত্যনিষ্ঠ তথ্য দ্বারা সুসজ্জিত করে পুণরায় উপস্থাপন করা। 


সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম তো জানলেন এবার একটি নমুনা বা উদাহরণ দেখা যাক, 


প্রতিবেদনের প্রকৃতি: সংবাদ প্রতিবেদন


প্রতিবেদনের শিরোনাম: সড়কের বেহাল দশা; যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে।


তারিখ: ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩


প্রতিবেদনের স্থান: চৌরাস্তা, গাজীপুর।


সড়কের বেহাল দশা; যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে


গাজীপুরের টঙ্গী বাজার থেকে সদর উপজেলার চৌরাস্তা পর্যন্ত বহুল ব্যবহৃত রাস্তাটি এখন যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে । গত প্রায় ১০ বছর ধরে সড়কটির কোনো সংস্কার কাজ হয়নি বরং সড়কের উপরে করা হয়েছে বড় বড় ফ্লাইওভার। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের এ বেহাল দশার কারণে লোকাল এরিয়ার যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।


গতকাল সোমবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, পনের কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির পুরোটাই বড় বড় গর্তে ভরে গিয়েছে। বিভিন্ন অংশে দুই পাশের মাটি সরে গেছে। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর ও গাজীপুরের অন্যান্য উপজেলার হাজার হাজার যান চলাচল করে। এছাড়া বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই পথে নিয়মিত যাতায়াত করে থাকে। এলাকাবাসীরা জানান, অধিক যানবাহনের চাপ ও বহুদিন মেরামত না করায় গত প্রায় ২০১৯ সাল থেকে সড়কটির সুরকির স্তর খালি হয়ে গিয়ে বালু বের হয়ে আসতে শুরু করে এবং এ থেকেই সৃষ্টি হয় খানাখন্দের। এরপর প্রতি শুকনো বা বর্ষায় পানি ও কাদায় সড়কটি একাকার হয়ে যায়, যা যান চলাচলের জন্য অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গত রবিবার একটি সিএনজি চালিত রাস্তার গর্তে পড়ে দূর্ঘটনার শিকার হয়, এতে চালকসহ ৩ জন যাত্রী আহত হন।


গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদের স্থানীয় সাধারণ মানুষ মনে করে, রাস্তাটি নিয়ে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ বহুদিনের অথচ সমাধানে কর্তৃপক্ষ তেমন কোন নজর দিচ্ছে না। রাস্তাটি মেরামতের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে বিভিন্ন সময় আবেদন করলেও কোনো প্রতিকার পায়নি তারা। তাই এলাকাবাসীর দাবি, গুরুত্বপূর্ণ ও বহুল ব্যবহৃত এই রাস্তাটি অতি দ্রুত সংস্কার করে জনদুর্ভোগ কমাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।


বিনীত


আব্দুল করিম


চৌরাস্তা, গাজীপুর 


১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩


 

অন্য পোস্টঃস্ট্যাম্প লেখার নিয়ম



প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম



উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনারা চাইলে নিচের নিয়ম অনুসরণ করে রিপোর্ট লিখতে পারেন।


তারিখ: ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


বরাবর,


চেয়ারম্যান ( অথবা যার কাছে প্রতিবেদন পেশ করা হবে তার পদবী)


প্রতিষ্ঠানের নাম:


প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা:


বিষয়:__________________________________________________ বিষয়ে প্রতিবেদন।


সূত্র/স্মারক নং: জেবিএল/সিএডি/প্রতিবেদন/২০২৩-১ তারিখ: ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩।


জনাব,


বিনীত নিবেদন এই যে, আপনার আদেশ নং জেবিএল/সিএডি/প্রতিবেদন/২০২৩-১ তারিখ: ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ অনুসারে (বিষয়ে যা লিখেছেন তাই লিখবেন) … … … উপলক্ষে প্রতিবেদনটি নিম্নে পেশ করছি।


এরপর (প্রতিবেদনের শিরোনাম) লিখুন।


বিবরণ: প্রয়োজন অনুসারে সর্বোচ্চ ৩/৪টি অনুচ্ছেদ।


মতামত:


প্রতিবেদকের স্বাক্ষর


প্রতিবেদনের বিষয়


প্রতিবেদনের সময়


প্রতিবেদনের তারিখ


প্রতিবেদনের স্থান


প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা



এসাইনমেন্ট প্রতিবেদন লেখার নিয়ম



শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অথবা বোর্ড পরীক্ষার এসাইনমেন্ট প্রতিবেদন লেখার নিয়ম,


১। A4 সাইজের কাগজের একপাশে লিখবেন। (কোনো ক্রমেই উভয় পাশে লিখবেন না)

২। এসাইনমেন্ট স্পষ্ট করে লেখার চেষ্টা করবেন।

৩। লেখার ভিতরে যেন একদমই কাটা-কাটি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

৪। প্রশ্নের সিরিয়াল (1,2,3…../ক,খ,গ…..) ইত্যাদি ঠিক রেখে লিখবেন।


লেখার পদ্ধতি:


★ বিষয় কোড ও বিষয়ের নামঃ এটা আপনার এসাইনমেন্টে এবং রেজিস্ট্রেশন কার্ডে লেখা আছে।” সেখান থেকে ভালোভাবে দেখে কোড ইংরেজীতেই লিখবে।


বিষয়ের নাম : “বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা”


★ শিরোনামঃ আপনি যদি “বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা” লেখা শুরু করবেন।

 

এবার  A4 সাইজ পেইজ নিয়ে পেন্সিল দিয়ে সুন্দর করে মার্জিন করে ফেলুন। কালো বলপয়েন্ট কলম দিয়ে লেখা শুরু করবেন। “এ্যাসাইনসেন্ট -০১” লিখে নিচে প্রথমে “ক” শেষ করে তারপর “খ” তারপর “গ” ধারাবাহিকভাবে আমরা পেইজের একপাশেই লিখে যাবো। অন্য পাশে খালি রাখি, কোনো দাগ বা পেইজের পাশে কোনো ফুল-পাপড়ি আঁকার প্রয়োজন নাই ।


এসাইনমেন্টে উত্তর লেখার ক্ষেত্রে কালো বলপয়েন্ট ছাড়া অন্য কোনো কালারিং পেন ব্যবহার না করাই ভালো। সম্পূর্ণ লেখা শেষ হলে পূরণ করা কাভার পেইজের (এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমান শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর প্রদত্ত প্রদত্ত কভার পেজ ব্যবহার করতে হবে।) অথবা বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলে হলে ডিপার্টমেন্ট অনুযায়ী কাবার ফটো নিয়ে এই লেখাগুলো পিনআপ করে নিন। ব্যাস এভাবে প্রস্তুত হয়ে গেল আপনার অ্যাসাইনমেন্ট

 

অন্য পোস্টঃডিভোর্স পেপার লেখার নিয়ম



সাংবাদিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম



'সাংবাদিক প্রতিবেদন' পেশা ভেদে বিভিন্ন ফরম্যাটে লেখা হয়ে থাকে। যেমন ধরুন, এক জন শিক্ষার্থী তার খাতায় যেভাবে লিখবে, এক জন পেশাদার সাংবাদিক হয়তো সেই ফরম্যাটে পত্রিকায় লিখবেন না। তবে ফরম্যাট যেমনই হোক না কেন, প্রতিবেদন লেখার মূল নিয়ম কিন্তু একই ধাঁচের হয়ে থাকে।


আমাদের দেশে শিরোনামকে আকর্ষণীয় করতে গিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক পন্থা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে ইউটিউবিং বা ব্লগিং এর ক্ষেত্রে এ ধরনের মিসলিডিং টাইটেলের ব্যবহার বেশি হয়। এসব অতি রঞ্জিত বা অতি চটকদার শিরোনাম বুঝদার মানুষকে বিরক্ত করে তোলে। তাই অতি রঞ্জন না করেই, শিরোনামকে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে।


এখানে ৩ টি উদাহরণ দিচ্ছি। 


১। সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ নারীর মৃত্যু


২। সড়ক দুর্ঘটনায় শেষ হয়ে গেলো ৩ নারীর জীবন


৩। দেখুন, কিভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা পড়লো ৩ নারী


এখানে একই কথাকেই ৩ রকম ভাবে লিখা হয়েছে। যেমন প্রথম শিরোনামটি অতি সাধারণ, যেটা হয়তো বেশিরভাগ প্রতিবেদক ব্যবহার করবে। দ্বিতীয় শিরোনামটি একটু আকর্ষণীয়, যেটা একই বিষয়কে উপস্থাপন করছে তবে, ২য় শিরোনামটির কারণে মানুষ কিছুটা আকৃষ্ট হবে। 


কিন্তু, ৩য় শিরোনামটি খেয়াল করলে দেখা যাবে যে এটা অতি রঞ্জিত। এ ধরনের শিরোনাম দেখেই সাধারণ মানুষ প্রতিবেদনটি পড়তে আগ্রহী হবে। তবে, প্রতিবেদন পড়া শেষে এরা নিরাশ হবেই। কেননা, শিরেনাম যতটা অতি রঞ্জিত করা হয়েছে, সে অনুযায়ী প্রতিবেদনের ভেতরে ততটা মশলা নেই।  শিরোনাম হতে হবে আকর্ষণীয়, ভেতরের কথার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং বাস্তবধর্মী। কেননা শিরোনামের উপরই পাঠকের আগ্রহ অনেকাংশে নির্ভর করে।


সাংবাদিক প্রতিবেদন লেখতে যে ফর্মেটটি ফলো করবেন, 


প্রতিবেদনের প্রকৃতি: (পত্রিকার কোন পাতাতে যাবে। যেমন রাজনীতি, ক্রীড়া, জাতীয় বা বিনোদন ইত্যাদি)

প্রতিবেদনের বিষয়: (প্রতিবেদন যে বিষয় নিয়ে তা লিখতে হবে)


প্রতিবেদনের তারিখ:


প্রতিবেদনের সময়:


প্রতিবেদনের স্থান: 


প্রতিবেদনের শিরোনাম: 


বিবরণ:………………..………………..………………..………………..………………..…


নিজস্ব প্রতিবেদক, দৈনিক নয়া দিগন্ত (বিবরণ শেষে প্রতিবেদকের পদবী এবং পত্রিকার নাম বসবে।)


প্রতিবেদনের সময়কাল


প্রতিবেদকের স্বাক্ষর



সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য প্রতিবেদন লেখার নিয়ম



উপরের প্যারায় যেমনটা দেখছিলেন প্রতিবেদনের শিরোনাম দেখে মানুষ বিস্তারিত পড়তে আসে। বিস্তারিত পড়ার সময় মানুষ প্রথম প্যারা পড়ার পর সাধারণত সামনের দিকে আর পড়তে চায় না। তাই প্রতিবেদনের প্রথম প্যারা এমনভাবে লিখতে হবে যেন মানুষ ঐ বিষয়ে যেটা জানতে চাচ্ছে, সেটা জানতে পারার পাশাপাশি কোনো অজানা বিষয় বা টুইস্ট এর টানে বাকি প্রতিবেদনটাও পড়তে ইচ্ছুক হয়।


ঠিক এ বিষয়টা আয়ত্ত করতে বড় বড় সাংবাদিকরাও হিমশিম খান। তাই যাঁরা প্রতিবেদন লেখা সবে শুরু করেছেন, তাঁরা এ বিষয়টা নিয়ে বেশি মাথা না ঘামানোই ভালো তবে চর্চায় থাকতে হবে। 


প্রতিবেদনের প্রথম প্যারাতে সাধারণত ঘটনার খুবই সংক্ষিপ্ত বিবরণ, সময় ও স্থানের উল্লেখ থাকে। 


২য় প্যারাতে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেয়া যেতে পারে। তৃতীয় প্যারাতে ঘটনার কারণ উল্লেখ করা  যেতে পারে। ৪র্থ প্যারায় প্রতিবেদনের মূল চরিত্র তথা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের বক্তব্য কিংবা ঘটনার ফলাফল কিংবা ইভেন্টের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত দেয়া যেতে পারে।


সব শেষে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে ঘটনার উপর প্রস্তাবনা দেয়া যেতে পারে। কেন এ ধরনের ঘটনা হওয়া উচিত, কিংবা কেন উচিত নয়, কিংবা কিভাবে বৃদ্ধি বা প্রতিরোধ করা যায় ইত্যাদি কথা প্রস্তাবনার মধ্যে যুক্ত করা যেতে পারে।



শিক্ষা সফর প্রতিবেদন লেখার নিয়ম



শিক্ষা সফরের প্রতিবেদন লেখতে আপনি নিম্নের পাঁচটি বিষয়ে উল্লেখ করতে পারেন। 


১. শিক্ষাসফরে যাওয়ার প্রস্তুতি।


২. উক্তস্থানে গমন।


৩.সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।


 ৪. সার্বিক ব্যবস্থাপনা।


 ৫. পরিসমাপ্তি।


শিক্ষা সফর প্রতিবেদনের একটি নমুনা,


১০ জুন, ২০২১


আদেশ নম্বর তা.মি.কা.মা. ক/২০২৩/১০২


বরাবর

অধ্যক্ষ

তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা, টঙ্গী শাখা 


বিষয়: সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া শিক্ষাসফর সম্পর্কে প্রতিবেদন।


জনাব,


গত ১০-০২-২০২৩ইং তারিখে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া শিক্ষাসফর সম্পর্কে প্রতিবেদন রচনায় আদিষ্ট হয়ে আমি নিচের প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করছি। 


(উপরের পাঁচটি বিষয়ে বিশদ বর্ণনা সহ উপস্থাপন করবেন) 


প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা : হাসান আল বান্ন, তামিল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা টঙ্গী শাখা। প্রতিবেদনের শিরোনাম : শিক্ষাসফর সম্পর্কে প্রতিবেদন। 

প্রতিবেদন তৈরির সময় : সকাল ১০টা।

তারিখ : ১০/০২/২০২৩।



বৃক্ষরোপন প্রতিবেদন লেখার নিয়ম



বৃক্ষরোপণ সম্পর্কিত প্রতিবেদন লেখার নিয়ম বা যে বিষয় গুলো উল্লেখ থাকতে হবে, 


১.প্রতিবেদনের নাম


২.প্রতিবেদনের শিরোনাম


৩.প্রতিবেদকের নাম


৪.প্রতিবেদন তৈরির সময় ও তারিখ


৫.প্রতিবেদন তৈরির স্থান


৬.প্রতিবেদনের ধরন



বিদ্যালয়ের প্রতিবেদন লেখার নিয়ম



কোনো বিদ্যালয়ের নিজস্ব প্রশাসনিক কাঠামো থেকে শুরু করে এর কার্যাবলির সাথে ঘটনা বা অবস্থা যাচাই করে সে সম্পর্কিত তথ্য, তত্ত্ব, উপাত্ত তুলে ধরে যে বিবরণী প্রণয়ন করা হয় তাকে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন বলে।


বিদ্যালয়ের প্রতিবেদন সাধারণত কোনো ব্যক্তি বা কোন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে লেখা হয়৷ যেমন: কোনো বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বা গ্রন্থাগার সম্পর্কে প্রতিবেদন, কোনো পরীক্ষাকেন্দ্রে গোলযোগ সম্পর্কিত প্রতিবেদন, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের ওপর ষান্মাসিক, বার্ষিক কিংবা দ্বিবার্ষিক প্রতিবেদন।


বিদ্যালয়ের প্রতিবেদন লেখার নিয়ম,



১. প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদনে সাধারণত তিনটি অংশ থাকে যেগুলোর ধারাবাহিকতা রক্ষা করে লিখতে হয়। প্রথম অংশে থাকে কর্তৃপক্ষের নিকট পত্র এরপর মূল প্রতিবেদন। সবশেষে থাকে প্ৰতিবেদন রচনা সংক্রান্ত তথ্য। নিচের দিকে প্রতিবেদন রচনা সংক্রান্ত তথ্যে, প্রতিবেদকের নাম, ঠিকানা ছাড়াও থাকে প্রতিবেদন রচনার সময়, তারিখ ইত্যাদি।


২. স্থান-কাল-পাত্র: প্রতিবেদন শুরু হয় স্থান-কাল-পাত্রের বর্ণনা দিয়ে যেখানে মূলকথা দিয়ে শুরু করে সারাংশ লিখতে হয় ভূমিকা হিসেবে।


৩. প্রতিবেদন খামে ভরে উপস্থাপন করতে হয় তাই পরীক্ষার খাতায় প্রতিবেদনের শেষে খাম আঁকতে হয় ।


৪. সবশেষে বিষয় পর্যালোচনা করে প্রতিবেদকের নিজস্ব একটি মন্তব্য থাকতে হয়। 




শেষকথা 



আশা করি আমাদের এই লেখনীর মাধ্যমে আপনারা প্রতিবেদন লেখার নিয়ম সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। 

Akash

প্রযুক্তির খবর, শিক্ষা ও ইন্সুরেন্স, ভিসার খবর, স্বাস্থ্য টিপস ও অনলাইনে আয় সম্পর্কিত তথ্যের বিরাট একটি প্ল্যাটফর্ম।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post