জরুরী মূহুর্তে বের হতে চাইলে মুভমেন্ট পাস আবেদন অনেকেরই প্রয়োজন হয়ে উঠে। মুভমেন্ট পাস দরকার হবে এমন সম্ভাবনা দেখা দিলে নির্ধারিত ওয়েবসাইট অথবা এ্যাপের মাধ্যমে মুভমেন্ট পাস আবেদন করে সহজেই সংগ্রহ করা সম্ভব। তবে বর্তমান সময়ে মুভমেন্ট পাসের আবেদন করার প্রয়োজনীয়তা অনেকাংশেই ফুরিয়ে গেলেও করোনা কালীন সময়ে মুভমেন্ট পাস খুবই জরুরী একটি বিষয় ছিল।
মুভমেন্ট পাস আবেদন কি?
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনলাইনে জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে প্রায় প্রতিটি সরকারি দপ্তরের অনলাইন ভিত্তিক সেবা কার্যক্রম চালু করার চেষ্টায় রয়েছে। এর মধ্যে
পুলিশ জানিয়েছে, দেশের যে কোন নাগরিক অনলাইনে কয়েকটি তথ্য সরবরাহ করে মুভমেন্ট পাস আবেদন করতে পারবেন।
পুলিশের মুভমেন্ট পাস এর জন্য আবেদন দুভাবে করা যায়। প্রথমত এপ্স দ্বারা ও সরাসরি বাংলাদেশ পুলিশের অফিশিয়াল http://police.gov.bd সাইটে প্রবেশ করতে হবে।
এরপর মুভমেন্ট পাসের আবেদন বাটনে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য অর্থাৎ ব্যক্তির নাম, মোবাইল ফোন নম্বর, বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্স, যাত্রার স্থান ও গন্তব্য, যাত্রার কারণ ইত্যাদি তথ্য উল্লেখ বা প্রদান করতে হবে। এরপর প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া হয়ে গেলে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
আবেদন শেষে যাচাই করে অনলাইন কিউআর কোড স্ক্যানার সহ একটি স্পেশাল পাস দেবে পুলিশ। নির্দিষ্ট কোড স্ক্যান করে রাস্তার বিভিন্ন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা আবেদনকারীর তথ্য ও যাত্রার কারণ পরখ করবেন।
মুভমেন্ট পাস আবেদন ফরম
মুভমেন্ট পাস আবেদন ফরম পূরণ করার জন্য প্রথমে আপনাকে পুলিশের মুভমেন্ট পাস ওয়েবসাইটে- movementpass.police.gov.bd এ প্রবেশ করতে হবে।
*তারপর সেখানে ধাপে ধাপে আপনার কিছু ব্যাক্তিগত তথ্য চাইবে। এরমধ্যে প্রথমেই ফোন নাম্বার দিতে হবে।
*আপনি যে রোবট নন সেটা ভেরিফাই করা হলে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।
*সেখানে যে পেজ আসবে ঐ পেজের খালি ঘরে পরপর দুইবার আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী জন্ম তারিখ লিখে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।
*ঠিক এর পরের পেজটা হবে একটু বড়। সেগুলোও ধাপে ধাপে সব বুঝিয়ে দিচ্ছি। পুলিশের মুভমেন্ট পাস আবেদন সম্পন্ন করতে নিচের অংশে চোখ রাখুন।
পুলিশের মুভমেন্ট পাস আবেদন
বাংলাদেশ পুলিশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ঢুকলেই দেখবেন “মুভমেন্ট পাসের আবেদন” নামে একটি লিংক আছে প্রথমে সেখানে ক্লিক করুন।এরপর মুভমেন্ট পাসের আবেদন (Apply for Movement Pass) চিহ্নিত বাটনে ক্লিক করুন।
১. প্রথম ধাপে আপনাকে মোবাইল নম্বর দিয়ে ওটিপি ভ্যারিফাই করতে হবে।
২. আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন – কোন থানা এলাকা থেকে কোন থানার অধীনস্ত এলাকায় যাবেন।
৩.কিংবা যে থানা এলাকায় যাবেন তা উল্লেখ করতে হবে।
৪. মুভমেন্ট পাস আবেদনকারীর নাম, লিঙ্গ, বয়স, ভ্রমণের সুনির্দিষ্ট কারণ, পাস ব্যবহারের তারিখ ও সময়, পাশের মেয়াদ শেষের তারিখসহ সময়, জাতীয় পরিচয়পত্র ও ব্যাক্তির ছবি ইত্যাদি তথ্য প্রদান করুন।
৫. সকল তথ্য দেওয়া হলে তারপর সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
বাংলাদেশের যে কোন নাগরিক পুলিশের এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মাত্র কয়েকটি তথ্য সরবরাহ করে পাস সংগ্রহ করতে পারবেন।
মুভমেন্ট পাস আপ্প ডাউনলোড
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অনেক সেবার অ্যাপ প্লে স্টোরে পাওয়া গেলেও মুভমেন্ট পাসের এই নির্দিষ্ট অ্যাপটি শুধুমাত্র বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইটেই বিদ্যমান।
শুরুতেই যেমনটা বলছিলা, মুভমেন্ট পাস এর জন্য আবেদন করার নিয়ম দুটি। প্রথমত App দ্বারা, দ্বিতীয়তো সরাসরি বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইট থেকে।
তো পুলিশের মুভমেন্ট পাস আপ্প ডাউনলোড করতে http://movementpass.police.gov.bd/ সাইটে প্রবেশ করতে হবে তারপর সেখানে দেখানো লিঙ্ক থেকে মুভমেন্ট পাশ App টি Download করে নিতে হবে।
মুভমেন্ট পাস পুলিশ গভ বড় রেজিস্ট্রেশন
প্রয়োজনীয় মুভমেন্ট পাসের জন্য প্রথমে মুভমেন্ট পাস পুলিশ গভ বিডি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন। বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন সফলভাবে সম্পন্ন হলে মুভমেন্ট পাস এর জন্য আবেদন করুন। ওয়েবসাইট বা এ্যাপে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের পর যাচাই বাছাইয়ের জন্য ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর নির্দিষ্ট সময় শেষ হলে, পাস সংগ্রহ অংশ থেকে আপনার কাঙ্খিত মুভমেন্ট বা অন্য যেকোনো পাস সংগ্রহ করুন।
অন্য পোস্টঃপ্রতিবেদন লেখার নিয়ম
কাদের মুভমেন্ট পাস লাগবে না
যেসব ব্যাক্তিদের মুভমেন্ট পাস লাগবেনা তারা হলেন,
নার্স
ডাক্তার
মেডিকেল স্টাফ
জরুরি সেবার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা/কর্মচারী
ব্যাংকার
ব্যাংকের অন্যান্য স্টাফ
সাংবাদিক
গণমাধ্যমের ক্যামেরাম্যান
টেলিফোন বা ইন্টারনেট সেবাকর্মী
বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী
কোভিড টিকা বা চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি বা স্টাফ
অফিসগামী সরকারি কর্মকর্তা
শিল্পকারখানা বা গার্মেন্টস পণ্য উৎপাদনের কর্মী বা কর্মকর্তা
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য
বন্দর–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা কর্মকর্তা
ডাকসেবা
পানি/বিদ্যুৎ/গ্যাস ও জ্বালানির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি বা কর্মকর্তা
ফায়ার সার্ভিস
মুভমেন্ট পাশের শুরুটা যেভাবে
২০২১ সালে যখন দেশে সর্বাত্মক লকডাউন চালু হয় তখনো ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু ছিল।এমনকি গণমাধ্যম, শিল্প কারখানাও চলছিল। সাধারণ নাগরিকদের অনেকেরই এমতাবস্থায় চলাচল করতে হচ্ছিল। তবে জনসাধারণের জন্য লকডাউনে চলাচল ও বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে আরোপ করা হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ।
তবে ঐ সময় বাংলাদেশে হাসপাতালসহ জরুরি সেবা খাতগুলো খোলা থাকায় অনেকেই জরুরি প্রয়োজনে বের হচ্ছিলেন।
আর এই বাসার বাইরে বের হওয়াকে কেন্দ্র করে কারা বাইরে বের হতে পারবেন, কারা পারবেন না, এ নিয়ে ভুল–বোঝাবুঝির ঘটনাও ঘটছিল সেসময়। এমনকি বাংলাদেশ পুলিশ এমন অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিল, যারা জরুরি সেবার আওতায় পড়েছেন।
তাই সবদিক বিবেচনায় ও পারিপার্শ্বিক পরিপ্রেক্ষিতে বিধিনিষেধের আওতামুক্ত ব্যক্তি কারা ও প্রতিষ্ঠান কোনগুলো সেটি জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। পুলিশ জানায় উপরের ঐ ১৮ শ্রেণীর মানুষের চলাচলে মুভমেন্ট পাস প্রয়োজন নেই। শুধু পরিচয়পত্র দেখিয়েই কর্মস্থলে আসা-যাওয়া করতে পারবেন।
অন্য পোস্টঃকবিতা আবৃত্তি করার নিয়ম
মুভমেন্ট পাস না নিয়ে রাস্তায় বের হলে ঐসময় কি হতো?
পাস না নিয়ে রাস্তায় বের হলে পুলিশের কাছে জবাবদিহিতা ও প্রশাসন যেকোনো ধরনের শাস্তি প্রদান করতে পারতো। জরিমানার পাশাপাশি অপমানিত করা হতো। যাত্রা অবস্থায় পুনরায় ফেরত পাঠানো হতো বাসস্থানে।
শেষ কথা
আশা করি আজকের পোস্টে যারা পড়েছেন তারা মুভমেন্ট পাস আবেদন কিভাবে করতে হয় এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন।তারপরেও যদি এই বিষয় সম্পর্কে কোন কিছু জানার থাকে বা পোস্টটি পড়ে কিছু বুঝতে অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ