আমরা অনেক সময় বিভিন্ন কারণে আমাদের জমি বন্ধক রেখে থাকি।কারো কাছে যদি কেউ জমি বন্ধক দেন তাহলে তাকে একটি বন্ধক নামা দিতে হয়। যার কারণে জমি বন্ধক নামা লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানা জরুরী। আজকের পোস্টে আমি আপনাদের কে জমি বন্ধক নামা লেখার নিয়ম বা জমি বন্ধক রাখার নিয়ম সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করবো।তাহলে চলুন দেরী না করে জেনে নেওয়া যাকঃ-
জমি বন্ধক রাখার নিয়ম
অনেকের জমি বিপদের সময় বা আর্থিক কোনো সঙ্কটের কারণে বন্ধক দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। তখন তারা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তার জমিটি আরেকজনের কাছে বন্ধক দিয়ে থাকে। নির্দিষ্ট সময় পর তারা বন্ধক নামা অনুযায়ী আঘাত তার জমিটি ফেরত নিয়ে থাকেন।
ধরুন আপনার এক বিঘা জমি রয়েছেন আপনার টাকার খুবই প্রয়োজন তাই আপনি এই এক বিঘা জমি কাউকে এক লাখ টাকার বিনিময়ে বন্ধক দিলেন। আপনি যে তাকে জমিটা বন্ধক দিচ্ছেন তার জন্য অবশ্যই একটি বন্ধকনামা করতে হবে।পরবর্তীতে আপনি চাইলে তাকে এই নির্দৃষ্ট টাকা দিয়ে জমি টা আবার নিজের কাছে নিয়ে নিতে পারবেন।
তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারছেন যে কারো কাছে জমি বন্ধক দেওয়ার জন্য বন্ধক নামা টা কতটা জরুরি।
জমি বন্ধক নামা লেখার নিয়ম
আপনি যখন জমি বন্ধক নামা লিখতে যাবেন সেখানে সর্বপ্রথম কাজ হচ্ছে একজন সাক্ষী রাখা।তারপরে এই চুক্তিটি আপনি যেই তারিখে করছেন সেখানে তারিখের নামটি উল্লেখ করতে হবে।
আপনারা হয়তো কমবেশি সকলেই জানেন যে বন্ধকরা আমার দুইটা পক্ষ থাকে। এখানে প্রথম পক্ষটি হচ্ছে গৃহীতা এবং দ্বিতীয় পক্ষ টি হচ্ছে দাতা। বন্ধক নামা লেখার আগে প্রথম পক্ষ অর্থাৎ গৃহীতা সেখানে তার নাম এবং পিতার নাম দিতে হবে। তারপর পরে দ্বিতীয় পক্ষের ক্ষেত্রে তার নাম তার পিতার নাম, সাল, ডাক, উপজেলা, এবং জেলার নাম দিতে হবে।
তারপরে আপনাদেরকে দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় একই স্বীকারোক্তি দিতে হবে বা টাইপ করতে হবে। আপনারা অনেকটা এইভাবে লিখতে পারেন -
আমি দ্বিতীয় পক্ষ মোহাম্মদ A.বর্তমানে আবার টাকার বিশেষ প্রয়োজন তাই আমি কোন উপায় না পাইয়া আমার ৪০ শতক আবাদি জমি যাহার মৌজা —---,জে এল নাম্বার —---,খতিয়ান নাম্বার —--,সাবেক —--,নতুন —--,দাগ নাম্বর সাবেক —--,নতুন —--,বন্ধক রাখার প্রস্তাব করিলে প্রথম পক্ষ উহা বন্ধক গ্রহণ করিতে সম্মত হন। উক্ত জমির বিপরীতে ৮০ হাজার টাকা একযোগে বুঝিয়া পাইয়াছি। উক্ত জমি বন্ধক তিন বছরের জন্য। উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে নিজ নাম সহি সম্পাদন করিলাম।
তারপরে দাতা এবং গ্রহীতা উভয় পক্ষের নাম এবং স্বাক্ষর দিতে হবে। যদি দাতা এবং গ্রহীতা পক্ষের কেউ স্বাক্ষর দিতে না পারে তাহলে তারা টিপসই দিতে পারবে। এরপরে সাক্ষীগণের স্বাক্ষর দিতে হবে। উভয়পক্ষের কমপক্ষে এক থেকে দুই জন অবশ্যই সাক্ষী থাকতে হবে। সাক্ষীগণ কে তার নিজের নাম, পিতার নাম, গ্রাম, ডাক উপজেলা ও থানার নাম উল্লেখ করতে হবে।
অন্য পোস্টঃজমির পর্চা ডাউনলোড করার উপায়
জমি বন্ধকের চুক্তিনামা /জমি বন্ধক নামা লেখার নিয়ম pdf
উপরের দেওয়া উল্লিখিত নিয়ম অনুসারে সাধারণত জমি বন্ধক নামা লেখা হয়ে থাকে। কেউ যদি তার জমি বন্ধক রাখতে চান তাহলে খুব সহজেই উপরের নিয়মে তার জমি বন্ধকের চুক্তিনামা লিখতে পারবে। তাহলে সে পরবর্তীতে কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হবে না এবং নির্বিঘ্নে তার জমি বন্ধক নামা লিখতে পারবে।
অন্য পোস্টঃজমির হিসাব বের করার সহজ উপায়
শেষ কথা, আশা করি আজকের পোস্টটি যারা পড়েছেন তারা জমি বন্ধক নামা লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যেকোনো ব্যক্তি চাইলে উক্ত নিয়ম অনুসারে তার জমির বন্ধকনামা লিখতে পারবেন।তার পরেও যদি কোন বিষয় সর্ম্পকে বুঝেনা থাকেন বা বুঝতে অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে সরাসরি কমেন্ট করে জানাতে পারেন আমরা আপনার প্রশ্নটির উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো।