জনতা ব্যাংক ডিপিএস খোলার নিয়ম |
আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে জনতা ব্যাংকের বিভিন্ন ধরনের ডিপিএস সম্পর্কে বলব এবং এর কি কি সুবিধা রয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
জনতা ব্যাংক ডিপিএস কি / janata bank dps
জনতা ব্যাংকে মেয়াদকালীন টাকা সঞ্চয় করাকেই জনতা ব্যাংক ডিপিএস বলে।অর্থাৎ এই অবস্থাই গ্রাহককে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জনতা ব্যাংকে টাকা রাখতে হয় এবং সেই সময়ের শেষে তারা মুনাফাসহ তার সঞ্চয়কৃত টাকা। এতে করে গ্রাহক বেশ উপকৃত হয়ে থাকেন।
জনতা ব্যাংক ডিপিএস কত প্রকার?
যারা জনতা ব্যাংকে ডিপিএস অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান তাদের জন্য জনতা ব্যাংক লিমিটেড ৫ ধরনের ডিপিএস অ্যাকাউন্ট তৈরি করার সুবিধা দিচ্ছে। যেমনঃ
- অনিবাসী পেনশন স্কিম
- জনতা হজ ডিপোজিট স্কিম
- জনতা ডিপোজিট স্কিম
- জনতা ব্যাংক নারী প্রকল্প সঞ্চয়ী হিসাব
- জনতা ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং সঞ্চয় হিসাব
জনতা ব্যাংকের গ্রাহকরা চাইলে এই পাঁচ ধরনের ইসকিন জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে তুলতে পারবেন। তাহলে চলুন এবার এই ডিপিএস স্কিম গুলো সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা নেওয়া যাক।
অন্য পোস্টঃ কৃষি ব্যাংক ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম
অনিবাসী পেনশন স্কিম
জনতা ব্যাংক বিদেশী বা প্রবাসীদের জন্য দারুণ একটি সুবিধা রেখেছে। বিদেশে কর্মরত কোন ব্যক্তি যদি ডিপিএস অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান তাহলে তারা চাইলে জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে অনিবাসী পেনশন স্কিম অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারেন।অনিবাসী পেনশন স্কিম একাউন্টের কিছু সুবিধা নিচে দেওয়া হলোঃ
- এই অ্যাকাউন্ট সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জন্য তৈরি করা যাবে।
- অনিবাসী পেনশন স্কিম এর মাসিক কিস্তি ৫ হাজার ১৫ হাজার এবং ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে পারবেন।
- আপনি একাউন্টে যে পরিমাণ টাকা রাখতে চান সেই পরিমাণ টাকা মাসের প্রথম দিন থেকে শেষ দিনের মধ্যে যেকোনো সময় রাখতে পারবেন।
- এই অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীরা বার্ষিক 8.5% ইন্টারেস্ট গ্রহণ করতে পারবে।
- মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই যদি আপনি এখান থেকে টাকা তুলতে চান তাহলে নির্দিষ্ট মেয়াদে ইন্টারেস্ট সুবিধা আপনি পাবেন।
অনিবাসী পেনশন স্কিম একাউন্ট খোলার নিয়ম?
যারা জনতা ব্যাংকে অনিবাসী পেনশন স্কিম একাউন্ট করতে চান তারা সার্ভে ইন্সট্রুমেন্ট এর মাধ্যমে খুব সহজেই একাউন্ট তৈরি করতে পারবেনঃ
- এই একাউন্ট খোলার জন্য একাউন্ট খোলার ফরম টি রয়েছে সেটি সংগ্রহ করতে হবে এবং পূরণ করে স্বাক্ষর করতে হবে।
- যে ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান সেই ব্যক্তির তিন কোটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
- পাসপোর্ট এর প্রথম সাত পাতার ফটোকপি দিতে হবে।
- যে ব্যক্তি কে নমিনি হিসেবে নির্বাচন করতে চান সেই ব্যক্তির 2 কপি ফটোকপি লাগবে।
- আপনার একাউন্টে আপনি যে টাকা জমা রাখতে চান সেই টাকা রেমিটেন্স এর ভিত্তিতে রাখতে পারবেন।
- আপনি চাইলে প্রতি মাসের কিস্তি প্রতি মাসে দিতে পারবেন তাছাড়া যদি মনে করেন তাহলে অগ্রিম টাকাও দিয়ে রাখতে পারেন।
জনতা ব্যাংক ডিপোজিট স্কিম
জনতা ব্যাংক ডিপিএস অ্যাকাউন্ট গুলোর মধ্যে এই অ্যাকাউন্টটি অন্যতম।যেকোনো ব্যক্তি চাইলে জনতা ব্যাংকে ডিপোজিট স্কিম একাউন্ট করতে পারেন। যারা কোন সুধ ছাড়া ডিপিএস অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান তারা চাইলে এই অ্যাকাউন্টটি অনায়াসেই তৈরি করতে পারেন। নিচে জনতা ব্যাংক ডিপোজিট স্কিম একাউন্টের সুবিধা দেওয়া হলোঃ
- যারা এই ধরনের অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান তারা ১ বছর থেকে ২০ বছর মেয়াদি একাউন্ট করতে পারেন।
- এই একাউন্টে জমাকৃত টাকার উপর কোন ধরনের সুযোগ দেওয়া হবে না অর্থাৎ আপনাকে বিনা ইন্টারেস্টে টাকা রাখতে হবে।
- আপনি চাইলে যে কোন মেয়াদে এখানে টাকা রাখতে পারেন।
- একাউন্টে জমাকৃত টাকা আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী যেকোনো সময় খুব সহজেই জনতা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে পারবেন।
- একাউন্টে টাকা রাখার সময় কোন ধরনের চার্জ দেওয়া লাগবে না শুধুমাত্র সরকারি টেক্স দিতে হবে।
জনতা ব্যাংক ডিপোজিট স্কিম একাউন্ট খোলার নিয়ম | জনতা ব্যাংক ডিপিএস
যারা জনতা ব্যাংক ডিপোজিট স্কিম একাউন্ট খুলতে চান তারা নির্দিষ্ট কিছু ডকুমেন্ট এর মাধ্যমে খুব সহজেই অ্যাকাউন্ট তৈরি করে ফেলতে পারবেন। যেমনঃ
- বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক এই ডিপোজিট স্কিম একাউন্ট করতে পারবেন।
- যিনি অ্যাকাউন্ট তৈরি করবে তার জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মধ্যে যেকোনো একটি ফটোকপি দিতে হবে।
- যে ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট তৈরি করবে তার দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন হবে এবং নমিনির 2 কপি ফটোকপি লাগবে।
- ১৮ বছরের নিচে কোন ব্যক্তি এই ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন না।
জনতা ব্যাংক নারী কল্যাণ ডিপিএস প্রকল্প?
জনতা ব্যাংক নারী কল্যাণ ডিপিএস প্রকল্প একাউন্টে খুব সহজেই খোলা যায়। তাহলে চলুন একাউন্ট তৈরীর ফিচারস গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ
- জনতা ব্যাংকের গ্রাহকরা চাইলে সর্বনিম্ন পাঁচ বছর থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে এই অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
- ১০০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতি মাসে কিস্তি দেওয়া যাবে।
- এই একাউন্টে জমাকৃত টাকার উপর বার্ষিক ৬% ইন্টারেস্ট প্রদান করা হবে।
- আপনি যদি মেয়াদ শেষ করার আগে টাকা তুলতে চান তাহলে কিছু কম ইন্টারেস্টে আপনি টাকা তুলতে পারবেন।
জনতা ব্যাংক নারী কল্যাণ ডিপিএস প্রকল্প একাউন্ট খোলার নিয়ম?
যারা জনতা ব্যাংকে ডিপিএস অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান তারা নির্দিষ্ট কিছু ডকুমেন্ট এর ভিত্তিতে খুব সহজেই জনতা ব্যাংকে এই অ্যাকাউন্টটি তৈরি করতে পারবেন। যেমনঃ-
- ১৮ বছরের বেশি বয়সী যেকোন নারী এখানে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
- অ্যাকাউন্ট তৈরি করার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মধ্যে যেকোন কিছুর ফটোকপি দিতে হবে।
- যে ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান সেই ব্যক্তির দু কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন হবে।
- নমিনীর ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি দিতে হবে।
আপনারা চাইলে এই সকল ডকুমেন্ট গুলো নিয়ে খুব সহজেই জনতা ব্যাংকের শাখায় গিয়ে এই অ্যাকাউন্টটি তৈরি করে ফেলতে পারবেন।
জনতা ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং ডিপিএস/জনতা ব্যাংক ডিপিএস?
জনতা ব্যাংকের স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমের মধ্যে এই ডিপিএসটি খুবই অসাধারণ।এই একাউন্টের কিছু সুবিধা নিচে দেওয়া হলোঃ
- আপনি চাইলে এক্ষেত্রে আপনার পছন্দমত যেকোন মেয়াদে এখানে টাকা জমাতে পারবেন।
- মাসিক কিস্তির পরিমাণ হবে ১০০ টাকা।
- এই একাউন্টের জন্য কোন ধরনের সুদের হার নির্ধারণ করা হয়নি।
জনতা ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং একাউন্ট খোলার নিয়ম?
যারা জনতা ব্যাংকের স্কুল ব্যাংকিং একাউন্ট করতে চান তারা চাইলে নির্দিষ্ট কিছু ডকুমেন্ট এর মাধ্যমে খুব সহজেই ডিপিএস অ্যাকাউন্ট তৈরি করে ফেলতে পারবেন। যেমনঃ
- যে ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান সেই ব্যক্তির জন্ম সনদের প্রয়োজন হবে।
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয় পত্র দরকার হবে।
- যিনি একাউন্ট করবে তার দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ফটোকপি লাগবে এবং নমিনীর দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
- তাছাড়া অন্যান্য কিছু ডকুমেন্টের প্রয়োজন হতে পারে।
আপনারা এই সকল ডকুমেন্ট গুলো নিয়ে জনতা ব্যাংকের শাখায় দিয়ে খুব সহজেই জনতা ব্যাংক ডিপিএস খুলতে পারবেন।
আমাদের শেষ কথা
আশা করি আজকের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে জনতা ব্যাংক ডিপিএস সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আপনারা সঠিক উত্তর পেয়েছেন।যারা জনতা ব্যাংকে ডিপিএস অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান তারা চাইলে উল্লেখিত এই সকল সুবিধা গুলো সেখান থেকে পাবেন।তার পরেও যদি আপনাদের কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।