আপেল খাওয়ার উপকারিতা
আপেল হল একটি সুস্বাদু ফল।আমাদের অনেকের মাঝে এ কথা প্রচলিত আছে যে প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলে নাকি ডাক্তারের কাছে যেতে হয় না।
আপেলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন উপকার সাধন করে থাকে।তাই আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত আপেল খাওয়ার কোনো জুড়ি নেই।ছোট এই ফলটি আপেলে রয়েছে অসংখ্য সব উপকারিতা।
নিয়মিত আপেল খাওয়ার ফলে তারা বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে দূরে থাকবেন এবং আপনাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব সহজেই বাড়াতে পারবেন।
আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনারা আপেল খাওয়ার উপকারিতা এবং আপেলের নানা ধরনের গুন সম্পর্কে জানতে পারবেন।তাহলে চলুন দেরী না করে শুরু করা যাকঃ
আপেল কেন খাবেন?
আপেল কিন্তু আমাদের সকলের কাছে পছন্দের একটি ফল। আপেল খেতে আমরা সকলে পছন্দ করে থাকি।কিন্তু অনেকে জানেন না আপেলের উপকারিতা সম্পর্কে। আপেলের রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ যে আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে।
আপেলের রয়েছে ভিটামিন ই, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস পটাশিয়াম, জিংক এর মত উপাদান যা আমাদের শরীরে বিভিন্নভাবে উপকার সাধন করে থাকে।
আপনারা নিয়মিত আপেল খাওয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই থেকে দূরে থাকবেন এবং আপনাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এর মাধ্যমে অনেক বৃদ্ধি পেয়ে যাবে।আপেল খাওয়ার রয়েছে অসংখ্য উপকারিতা।তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক আপেল খাওয়ার কয়েকটি উপকারিতা সম্পর্কেঃ
আপেল খাওয়ার উপকারিতা
১.আপনার দাঁতকে করে তোলে সাদা এবং ঝকঝকে
আপেলের ভিতরে রয়েছে আয়রন। এই উপাদানটি আমাদের দাতের জন্য খুবই উপকারী।আপেল খেলে দাঁতের অনেক উপকার হয়ে থাকে।
আমরা যখন আপেলে কামড় দেয়ার মাধ্যমে আপেল খাওয়া শুরু করি তখন আমাদের মুখের ভিতর এক ধরনের লালা সৃষ্টি হয়ে থাকে।
আর এই লালা আমাদের দাঁতের জন্য খুবই উপকারী এই পদ্ধতিতে আমাদের মুখের ভেতর থেকে ক্ষতিকর সব ধরনের ব্যাকটেরিয়া বেরিয়ে আসে। যার ফলে আমাদের দাঁত হয় অনেক সাদা এবং ঝকঝকে।
২.ক্যান্সারের সমস্যা থেকে শরীরকে দূরে রাখে
নিয়মিত আপেল খাওয়ার ফলে অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের সম্ভাবনা ২৩% হ্রাস পেয়ে থাকে। কেননা আপেলের ভিতরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যাভোনল।
তাছাড়া আপেলের ভেতরে মূলত আরো অনেক ধরনের উপাদান রয়েছে যা ট্রিটারপেনয়েডস নামে পরিচিত।
আর সাধারনত এই উপাদানটি লিভার,স্তন এবং কোলনের মতো ক্যানসারের কোষ বেড়ে উঠতে দেয় না। যার ফলে আমাদের শরীরে ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে অনেকটা দূরে থাকি।
তাছাড়া আপেলের ভিতরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা মলাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩.ডায়াবেটিসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে
সাধারণত যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা যদি প্রতিদিন নিয়মিত একটি করে আপেল খায় তাহলে তাদের ডায়াবেটিস হ্রাস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
তাছাড়া গবেষণায় আরো একটা জিনিস প্রমাণ হয়েছে যে সকল মানুষেরা প্রতিদিন একটি করে আপেল খেয়ে থাকেন তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা ২৮% কম থাকে অন্যান্যদের চেয়ে।
তাই ডায়াবেটিস এর সমস্যা যদি থেকে থাকে তাহলে আপনারা ডায়াবেটিসের সমস্যা কমানোর জন্য হলেও প্রতিদিন একটি করে হলেও আপেল খাওয়ার অভ্যাস করুন।
৪.আমাদের হার্ট ভালো রাখে
আপেল খাওয়ার আরেকটি উপকারীতার মধ্যে একটি হচ্ছে অন্যতম।আপেলের ভিতরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবারের যা সাধারণত আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে থাকে।
তাছাড়া আপেলের ভিতরে যে ফেনোলিক নামক এক ধরনের উপাদান থাকে তা আমাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
আর এর ফলে আমাদের হার্ট রক্ত চলাচলের গতি স্বাভাবিক থাকে এবং আমাদের হাট অনেক সুস্থ থাকে। তাই হার্ট সুরক্ষার জন্য হলেও প্রতিদিন একটি করে আপেল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
৫.ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে আমাদের দূরে রাখে
আপেল ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের জন্য দারুন একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা। যাদের বারবার পায়খানা হয়ে যাওয়ার অভ্যাস রয়েছে বা একেবারে পেট পরিষ্কার হয় না পায়খানায় গেলেও তাদের জন্য আঁপেল হতে পারে দারুন একটি ব্যবস্থা।
আপেলের ভিতরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা সাধারণত আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। আর এর ফলে আমরা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে রেহাই পেয়ে থাকি।তাই বাইরে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে আপেল খেতে পারেন নিয়মিত।
৬.ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ওজন বাড়ার সমস্যা বা বাড়তি ওজনের জন্য অনেক চিন্তায় থাকেন। তাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজনের জন্য নানা ধরনের রোগ বালাই বাসা বাঁধে।
তাই যদি বাড়তি ওজনের সমস্যায় থেকে থাকেন তাহলে নিয়মিত আপেল খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। আপেলের ভিতরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি আমাদের পেট ভরা তে সাহায্য করে থাকে।
যার ফলে ঘনঘন খিদে হওয়ার প্রবণতা অনেক কমে যায়। তাই আপনারা ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত আপেল খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।এর ফলে আপেল খাওয়ার উপকারিতা সাথে আপনাদের ওজনও কমবে।
৭.লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে
আমরা বেঁচে থাকার জন্য অনেক খাবার খেয়ে থাকি আর এর ভেতরে অনেক খাবার রয়েছে যার মধ্যে ক্ষতিকর উপাদান থাকে।যার ফলে আমাদের লিভারের ধীরে ধীরে ক্ষতি হতে থাকে।
তাই আমাদের শরীরের ভিতরে থাকা লিভারের সুস্থতা বজায় রাখার জন্য আপেল হতে পারে দারুন একটি নিয়ামক। আপনার লিভারকে ১০০% সুস্থ রাখার জন্য দারুণ এবং কার্যকরী একটি উপাদান হচ্ছে আপেল।
আপেল খাওয়ার ফলে খুব সহজেই লিভারের থাকা ক্ষতিকর বিভিন্ন ধরনের উপাদান বেরিয়ে যায়। আপেল খাওয়ার দারুন একটি উপকারিতা হচ্ছে এটি।
আপেল খাওয়ার নিয়ম
আপেল খাওয়ার সঠিক উপকারিতা যদি আপনাদের পেতে হয় তাহলে অবশ্যই সঠিক নিয়ম অনুযায়ী আপনাদের আপেল খেতে হবে। আপনারা যখন খুশি তখন আপেল খেলে শরীরের উপকার হবে কথাটা কিন্তু তেমন না।তাহলে চলুন আপেল খাওয়ার নিয়ম জেনে নিনঃ
আপেল খাওয়ার উপযুক্ত সময়
সাধারণত আপেল খাওয়ার সঠিক নিয়ম হলো সকাল বেলা। কেননা আপেলের খোসা হচ্ছে মূলত আঁশ এবং পেকটিন সমৃদ্ধ।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা অপর্যাপ্ত ঘুম এবং দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার জন্য হজম তন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগে থাকেন।
তাই আপনি যদি সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে আপেল খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার শরীরের জন্য খুবই ভালো হবে। অন্যান্য যেসব ফল রয়েছে তাদের মধ্যে আপেল খেলে আপনার অন্তরের ক্রিয়া সঠিকভাবে পরিচালনা হবে এবং এতে আপনার হজম তন্ত্র ঠিক থাকবে
তাই যদি আপেলের সঠিক উপকারিতা আপনারা পেতে চান তাহলে অবশ্যই সকালবেলা আপনারা আপেল খাবেন।
আপনারা চাইলে দুপুরবেলা আপেল খেতে পারেন দুপুরবেলা যদি খাওয়ার আগে আপেল খান তাহলে আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকারী হবে।আপনি চাইলেই দুপুরের খাবারের আগে নাস্তা হিসেবে একবার আপেল খেতে পারেন।
আপেল কখন খাবেন না
আপনি যদি বিকালে বা রাতে আপেল খান তাহলে আপনার শরীরের জন্য এটি ঝামেলা বা সমস্যা হতে পারে।বিকালে এবং রাতে আপেল খাওয়ার ফলে সেটা আমাদের হজম তন্ত্রের কাজে ব্যাঘাত ঘটিয়ে থাকে।
তাই আপনি এই সময়টা দেখ আপেল খাবেন না কেননা এই সময়ে আপেল খেলে পরে একটা গ্যাসের সৃষ্টি হয় যার ফলে আপনি বাড়তি সমস্যার সম্মুখীন হবেন।
পরিশেষে, আপেল খাওয়ার আরো অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। প্রবাদ আছে, প্রতিদিন যদি একটি করে আপেল খাওয়া যায় তাহলে নাকি আর ডাক্তারের কাছে যাওয়া লাগে না। তাহলে আপনারা এতক্ষণে অবশ্যই বুঝে গিয়েছে যে আপেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।তাই শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য প্রতিদিন একটি করে হলেও আপেল খাওয়ার অভ্যাস করুন।