হাতের পেশি মোটা করার সহজ উপায়ঃসাধারণত আমাদের দেহের সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং আমাদের ফিটনেস সকলের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য হাতের পেশি মোটা হওয়া খুবই জরুরী।
হাতের পেশি মোটা হলে আমাদের ফিটনেস অন্যদের কাছে আকর্ষণীয় লাগে।স্বাস্থ্যবান শরীরের জন্য হাতের মোটা পেশি খুবই মানানসই।
আমরা অনেকেই হাতের পেশি মোটা করার জন্য অনেক ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকি।কেউ কেউ সরাসরি চিকিৎসা পদ্ধতিতে চলে যান। কিন্তু আপনারা চাইলে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করার মাধ্যমে হাতের পেশি মোটা করতে পারবেন।
আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করব হাতের পেশি মোটা করার সহজ উপায় নিয়ে। আপনারা এই উপায়ে গুলোর মাধ্যমে বাড়িতে বসেই আপনাদের হাতের পেশি খুব দ্রুত মোটা করতে পারবেন।
হাতের পেশি মোটা করার সহজ উপায়
পুশ আপ করতে হবে
হাতের পেশি মোটা করার সহজ উপায়ের মধ্যে পুশআপ খুবই কার্যকরী। আর আপনারা যারা কমবেশি ব্যায়াম করে থাকেন তারা হয়তো অবশ্যই পুশ আপের সাথে পরিচিত।
প্রসাব করার জন্য প্রথমে পায়ের আঙ্গুলে এবং দুই হাতের উপরে কিছুটা উপর হওয়ার মতো বড় করতে হবে এবং আপনার হাত দুটো অবশ্যই বুক বরাবর সোজা রাখতে হবে।
তারপর পুরো শরীরকে সোজা রাখতে হবে এবং এই অবস্থায় নিচের দিকে ঝুঁকতে হবে। যাতে আপনার নাক এবং বুক মাটিতে হালকা ভাবে স্পর্ষ করে।
তারপর আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে হবে। এইভাবে আপনাকে দুই থেকে তিন ধাপ দিতে হবে।
আপনি যদি পারেন তাহলে প্রতি ধাপে ১২ থেকে ১৫ বার পুশ আপ দিতে পারেন। আপনি এক্ষেত্রে যত বেশি করতে পারবেন ততই ভালো।
প্রসাব করার ফলে আপনার পায়ের পেশির সাথে সাথে আপনার হাতের পেশি ও উন্নত হবে। পুশ আপ করার ফলে আপনার সারা শরীর এর উপকারিতা পাবে।
তাই আপনি যদি হাতের পেশি দ্রুত বৃদ্ধি এবং মজবুত করতে চান তাহলে নিয়মিত পুশ আপ করার বিকল্প আর কোন ব্যায়াম নাই।
ডাম্বেল ফ্রন্ট কার্ল
আপনি যদি এই ব্যায়ামটি করতে চান তাহলে অবশ্যই এর জন্য আপনার ডাম্বেল এর প্রয়োজন হবে। প্রথম পর্যায়ে আপনাকে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দুটি ডাম্বেল দুই হাতে নিতে হবে।
তবে আপনি আরেকটা জিনিস খেয়াল রাখবেন সেটা হচ্ছে প্রথম অবস্থায় ওজন কম নিয়ে ব্যায়াম করা ভালো। তারপর ডান হাতের ডাম্বেল টি কনুই ভাজ করে কাঁধ বরাবর উপরের দিকে উঠাতে হবে।
তারপর ডান হাত নামিয়ে বাম হাতে থাকা ডাম্বেল টি ডান হাতের মত করে কনুই ভাজ করে কাঁধ বরাবর উঠাতে হবে।
প্রথম পর্যায় এইভাবে ১৫ থেকে ২০ বার দিতে হবে।আস্তে আস্তে ধাপে ধাপে সামর্থ্য অনুযায়ী এটা আরো বাড়াতে হবে। আপনি এই ক্ষেত্রে যত বেশি করতে পারবেন আপনার পেশীর জন্য তত ভালো হবে।
এই ব্যায়াম করার মাধ্যমে আপনার হাতের পেশি তাড়াতাড়ি মোটা এবং সুগঠিত হবে। তাই আপনি হাতের পেশি বাড়ানোর জন্য এই ব্যায়ামটি নিয়মিত করতে থাকুন। তবে কোন সময় অতিরিক্ত করবেন না কেননা অতিরিক্ত করা আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হবে।
মাউন্টেন ক্লিমবার
হাতের পেশি বৃদ্ধি করার জন্য এটি খুবই উপকারী একটি ব্যায়াম। এই ব্যায়ামটি শুরু করার আগে পুশ আপের পজিশন মত নিয়ে নিন।মাউন্টেন ক্লিম্ববারে হাত সোজা থাকবে নিচে নামবে না।তারপর ডান পা বাঁকিয়ে বুকের কাছে আনুন এবং বাম পা সোজা রাখুন। তারপরে কিভাবে বাম পা ও করুন।হাতের পেশি মোটা করার সহজ উপায় গুলোর মধ্যে এটিও একটি কার্যকরী ব্যায়াম।
বারবেল ফ্রন্ট কার্ল
আপনাকে যদি এই ব্যায়ামটি করতে হয় তাহলে অবশ্যই বারবেল এর দরকার হবে। তবে বারবেলে অবশ্যই কম ওজন নিতে হবে কেননা বেশি ওজন নিলে আপনার হাতের পেশির ক্ষতি হতে পারে।
আপনাকে প্রথমে হাতের তালু সামনের দিকে রেখে দুহাত দিয়ে বারবেল হাতে নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। তারপর হাতের কনুই ভাঁজ করে কাঁধ পর্যন্ত তুলতে হবে এবং আবার হাত সোজা করে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসতে হবে। এই ব্যায়াম করার সময় অবশ্যই একটি বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে সেটি হচ্ছে শরীর যেন বাঁকা না হয় এবং সামনের দিকে ঝুঁকে না পরে।
ডাম্বেল ব্যাক কার্ল
আপনাকে এই ব্যায়ামটি করার আগে প্রথমেই দুই হাতে দুটি ডাম্বেল নিয়ে নিতে হবে। তারপর হাতের তালুর সামনের দিকে রেখে কনুই ভাজ করে কাঁধ পর্যন্ত তুলতে হবে।
এভাবে আপনাকে ১৮ থেকে ২০ বার করতে হবে।এটা সাধারণত হাতের উপরের অংশের পেশির বৃদ্ধির সাথে সাথে হাতের কব্জি মোটা ও সুগঠিত করতে সাহায্য করে থাকে।
তাই সাধারণত হাতের পেশি উপরের এবং নিচের দিকে সুগঠিত করার জন্য নিয়মিত এই ব্যায়ামটি করতে পারেন। হাতের পেশি মোটা করার সহজ উপায় গুলোর মধ্যে এটিও একটি।
হাতের পেশি মোটা করার খাবার
তাহলে তো এতোক্ষণ জানলেন হাতের পেশি মোটা করার জন্য ব্যায়ামের কথা চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক হাতের পেশি মোটা করার জন্য কোন খাবারগুলো খাবেন সেই সম্পর্কেঃ
১.ডিমঃডিমের ভেতরে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন। এটি মুলত আমাদের পেশী গঠন করতে সাহায্য করে থাকে। আর এই প্রোটিনের রয়েছে ৯ টি অ্যামাইনো এসিড। যা আমাদের পেশির পূর্ণ গঠনে সাহায্য করে থাকে।
তাই আপনি হাতের পেশি গঠন করার জন্য ওই ব্যায়ামগুলোর পর ডিম খেতে পারেন। এর ফলে আপনার হাতের পেশির ক্ষয়পূরণ রোধ হবে এবং হাতের পেশির গঠন দ্রুত হবে।
২.মুরগির মাংসঃহাতের পেশি গঠন করার জন্য মুরগির মাংস কিন্তু দারুন একটি খাবার। মুরগির মাংস হচ্ছে ভালো লিন প্রোটিনের একটি উৎস।তাছাড়া মুরগির মাংস তে হাতের পেশি বাড়ানোর আরো অনেক কার্যকরী উপাদান রয়েছে।
তাই আপনারা যদি জিম করেন নিয়মিত হাতের পেশি বাড়ানোর জন্য তাহলে জিমের পর মুরগির মাংস খেতে পারেন তাহলে আপনার হাতের পেশি খুবই দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।
৩.দুধঃহাতের পেশি বৃদ্ধি করার জন্য মোটা করার জন্য আরেকটি ভালো খাবার হচ্ছে দুধ। দুধের ভেতর রয়েছে ভিটামিন এবং মিনারেল। তাছাড়া এতে আরও রয়েছে ভালো কার্বোহাইড্রেট ও চর্বি।
তাই নিসন্দেহে বলা যায় দুধের থাকা সকল উপাদানই আমাদের শরীরের জন্য খুবই ভালো। টাইটানিক পেশী বৃদ্ধির ব্যায়ামের পর দুধ খেতে পারেন এতে করে আপনার হাতের পেশি দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।
৪.পালং শাকঃহাতের পেশি যদি খুব দ্রুতই মোটা করতে চান তাহলে আপনার জন্য কার্যকারী একটি খাবার হচ্ছে পালং শাক। পালংশাক বেশি পুনর্গঠনে সাহায্য করে থাকে।
পালংশাকের থাকে সাইটোয়েকডাইস্টেরয়েডস নামের এক ধরনের উপাদান যা সাধারণত পেশীর বৃদ্ধি ২০ ভাগ বাড়িয়ে দেয়। তাই পেশির দ্রুত বৃদ্ধির জন্য আপনারা পালং শাক খেতে পারেন।
৫.কাঠবাদামঃযারা হাতের পেশি দ্রুত বাড়াতে চান তাদের জন্য আরেকটি ভালো খাবার হলো কাঠবাদাম। কাঠবাদাম এর মধ্যে থাকা প্রোটিন আঁশ এবং ভিটামিন ই হাতের পেশির জন্য খুবই ভালো।
তাই আপনারা যদি হাতের পেশি দ্রুত বাড়াতে চান তাহলে নিয়মিত ব্যায়াম করার সাথে সাথে কাঠ বাদাম খেতে পারেন তাহলে অনেক উপকার হবে এবং আপনাদের হাতের পেশি অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।
আমাদের শেষ কথা
হাতের পেশি মোটা করার সহজ উপায় গুলো নিয়ে আমি আজকের আর্টিকেলে আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি। আপনারা যদি উক্ত ব্যায়ামের পাশাপাশি ঐসকল খাবারগুলো খেতে পারেন তাহলে অবশ্যই খুব দ্রুতই আপনার হাতের পেশি মোটা হবে এবং আপনার ফিটনেস সকলের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।