আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা বড় ব্যবসা শুরু করতে চান। কিন্তু সঠিক গাইডলাইন বা নির্দেশনার অভাবে সাহস পাচ্ছেন না কিভাবে বড় ব্যবসা শুরু করবেন। অনেকে সাহস পাচ্ছেন কিংবা তারা ঝুঁকি নিতে পারছেন না। তবে আপনি হয়তো একটা জিনিস জানেন না যে ব্যবসাতে ঝুঁকি বেশি সেই ব্যবসায় লাভের পরিমাণ বেশি।
আমরা বর্তমান যে সময়ে বসবাস করছি এই সময়ে চাকরিটা যেন হয়ে গিয়েছে সোনার হরিণ। চাকরি এখন হয়ে গিয়েছে খুবই দুর্লভ। তাই অনেকেই ছুটছেন ব্যবসার দিকে।ব্যবসা করার মাধ্যমে তারা নিজেকে করে তুলছেন স্বাবলম্বী এবং এই ব্যবসার মাধ্যমে তারা অনেককে কাজও দিচ্ছেন।
সেরা ১০টি বড় ব্যবসার আইডিয়া |
যার ফলে তারাও দেশের বেকারত্ব নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে। আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব বড় ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে।তাহলে চলুন দেরী না করে শুরু করা যাকঃ
১. জুয়েলারির ব্যবসা
আপনি যদি পরও ব্যবসা করবেন বলে ভাবছেন তাহলে আপনি জুয়েলারির ব্যবসাটি করতে পারেন। কেননা নারীদের সকল সময়ই অলংকারের প্রতি চাহিদা বেশি।আপনি চাইলে এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে অলংকারের ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
সোনার গয়না, গোল্ড প্লেটেড গয়না ইমিটেশনের গয়না এগুলো নিয়ে আপনি জুয়েলারির ব্যবসা শুরু করতে পারেন।তবে অবশ্যই আপনাকে জুয়েলারি ব্যবসা শুরুর আগে বিভিন্ন ধরনের দোকান বা মার্কেটে ঘুরে জুয়েলারি দাম সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নিতে হবে।
আপনি যদি নিজে এই ক্ষেত্রে একটি উৎপাদন কারখানা নিতে পারেন তাহলে তো কোন কথাই থাকে না। আপনি যখন নিজে তৈরি করবেন তখন গয়নার মান নিয়ে কোন সন্দেহ থাকবে না এবং এতে করে আপনার লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যাবে। তাই আপনি যদি বড় ব্যবসা আইডিয়া গুলোর মধ্যে ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে এই ব্যবসাটি করতে পারেন।
২. প্লাস্টিকের ব্যবসা
আজকাল প্রায় সব ক্ষেত্রেই প্লাস্টিকের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বাসা বাড়ি থেকে শুরু করে সব জায়গায় দেখবেন প্লাস্টিকের কোন না কোন জিনিস রয়েছে। তাছাড়া প্লাস্টিকের ব্যবহার দিন দিন আরও বেড়ে চলেছে।
তাই আপনি যদি মনে করেন যে প্লাস্টিকের ব্যবসা করবেন তাহলে এটা হতে পারে একটি আদর্শ বড় ব্যবসা আইডিয়া আপনার জন্য। প্লাস্টিকের ব্যবসাটি বর্তমানে একটি উৎপাদনমুখী ব্যবসা। তাই আপনি যদি বড় ব্যবসা আইডিয়ার মধ্যে এই ব্যবসাটি করতে চান সেক্ষেত্রে আপনার মূলধনও বেশি লাগবে।
৩. হিমায়িত খাদ্য এর ব্যবসা
আপনারা হয়তো একটা দিকে খেয়াল করেছেন যে বর্তমানে হিমায়িত খাদ্য এর পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। ব্যস্ত মানুষের কষ্ট খুব সহজেই লাঘব করে দিচ্ছে এই হিমায়িত খাদ্য। ফ্রোজেন ফুড এর তালিকায় এখন আপনি পাবেন সবকিছুই। তাছাড়া এগুলো সংরক্ষণ করে রাখা যায় বলে মানুষের পছন্দের তালিকার শীর্ষে এগুলা।
তাই এক্ষেত্রে হিমায়িত খাদ্য এর ব্যবসা হতে পারে একটি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া।তাছাড়া যতই দিন যাচ্ছে এই খাবারের মান এবং স্বাদ যেন আরও উন্নত হচ্ছে। তাই আপনি যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ এবং যত্ন সহকারে খাবার রাখতে পারেন তাহলে এই ব্যবসা করার মাধ্যমে আপনি ভালো লাভবান হতে পারবেন।
৪. হ্যাচারীর ব্যবসা
হ্যাচারি হলো মূলত এক ধরনের কৃত্রিম জলাশয় যেখানে মাছ লালন-পালন করা হয়ে থাকে। সাধারণত এটা হল মাছের খামার। এখানে মাছের রেনু চাষ থেকে শুরু করে মাছের ডিম পাড়া,ধানি পোনা তৈরি করা, সব ধরনের কাজ এই হ্যাচারিতে করা হয়ে থাকে।
তাই আপনি যদি বড় ব্যবসা করতে চান এই হ্যাচারীর ব্যবসা হতে পারে আপনার জন্য একটি বড় লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া। তার কারণ প্রাকৃতিকভাবে মাছের পোনা সব সময় পাওয়া যায় না আবার কিছু কিছু পোনা কিছুক্ষেত্রে পাওয়া যায় না তাই আপনি এই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে পারেন।
কিন্তু আপনাকে এই ব্যবসায় লাগার আগে কিছুদিন প্রশিক্ষণ নিতে হবে এবং তারপর এই হ্যাচারি ব্যবসা শুরু করতে হবে।বেকার যুবকদের জন্য এটি হতে পারে আদর্শ একটি ব্যবসা। মাছের হ্যাচারি ব্যবসা করার জন্য আপনি সুবিধাজনক একটি জায়গা সিলেক্ট করে সেখানে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তাই আপনি এই ব্যবসা শুরু করার আগে অবশ্যই প্রশিক্ষণ নিবে ন।
৫. শুটকি মাছের ব্যবসা
সাধারণত আমাদের দেশে শুটকি মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। শুটকি মাছের দামও ভালো পাওয়া যায়। আমাদের দেশের নদ-নদীতে প্রচুর মাছ পাওয়া যায় কিন্তু সব মাছ বিক্রি হয় না।আমরা চাইলে সেসব মাছ সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাতকরণ করে শুটকি তৈরি করতে পারি এবং বাজারে বিক্রি করতে পারি।
শুটকি মাছের ব্যবসাটি বর্তমানে লাভজনক একটি ব্যবসা পদ্ধতিতে পরিণত হয়েছে।তাছাড়া বড় ব্যবসা আইডিয়া গুলোর মধ্যে এখন শুটকি মাছের ব্যবসা কেউ ধরা হচ্ছে।তাই আপনারা চাইলে শুটকি মাছের ব্যবসাটি করতে পারেন।
৬. কম্পিউটার ও সফটওয়্যার এর ব্যবসা
বর্তমানে আমরা প্রযুক্তির ডিজিটাল যুগে বসবাস করছি। দিনে দিনে পরিবর্তন হচ্ছে সবকিছু।আমাদের দৈনন্দিন জীবনে তত্ত্বের ভূমিকা অপরিসীম। তাছাড়া বর্তমানে আমরা কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ছাড়া আমাদের জীবনকে যেন ভাবতে পারে না।
তাই এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে আপনারা আপনি কম্পিউটারের ব্যবসা করতে পারেন।আর আপনি যদি এই ক্ষেত্রে একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য এটি হতে পারে দারুন একটি ব্যবসা।
আপনারা প্রথমে এই ব্যবসাটি অল্প পরিসরে একটি অফিস ভাড়া নেওয়ার মাধ্যমে করতে পারেন।তারপর যখন আপনার কাজের পরিধি বাড়তে থাকবে তখন আপনি নতুন আইসিটিতে দক্ষ কর্মী নিয়োগ নিতে পারেন।
৭. ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবসা
বড় ব্যবসা আইডিয়া গুলোর মধ্যে ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবসা টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যবসা। আপনারা চাইলে ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবসাটি করতে পারেন এবং খুব সহজেই লাভবান হতে পারেন।ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা করার জন্য আপনার একটি দোকানের দরকার হবে।
আপনি প্রথম পর্যায়ে ছোট একটি দোকান ভাড়া করে ইলেকট্রনিক এর মালামাল সেই দোকানে তুলে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তারপরে আপনার ব্যবসার পরিধি যখন বৃদ্ধি পাবে তখন আপনি দোকান বড় করতে পারেন এবং মালও বৃদ্ধি করতে পারেন।
আপনার দোকানে যত বেশি মাল থাকবেন এবং আপনার দোকানের মালের যত বেশি চাহিদা থাকবে তখন আপনি এই ব্যবসায় লাভবান হতে পারবেন। তাহলে দেরি না করে শুরু করে দিন ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবসাটি।
৮. ইট, বালু সিমেন্ট ও রডের ব্যবসা
ইট বালু সিমেন্টের ব্যবসা বিভিন্নভাবে করা যেতে পারে। আপনি চাইলে এর জন্য নির্দিষ্ট জায়গা সিলেক্ট করতে পারেন বা একটি দোকান দিয়ে দিতে পারেন। তবে আমার মনে হয় এই ব্যবসাটি করার জন্য দোকান দেওয়া সব থেকে ভালো।
কেননা দোকান দেওয়ার ফলে আপনি ইট বালু সিমেন্ট ও রডের ব্যবসার সাথে হার্ডওয়ারের বিভিন্ন উপকরণ বিক্রি করতে পারবেন। যার ফলে আপনার লাভের পরিমাণ টা আরো অনেকাংশে বেড়ে যাবে।
৯. কৃষি প্রযুক্তির ব্যবসা
বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ।তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারছেন যে কৃষিপ্রধান এই দেশে কৃষি যন্ত্রপাতির কতটা চাহিদা থাকবে। আপনি এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে ভালো একটি কৃষি যন্ত্রপাতির দোকান দিতে পারেন। আপনার দোকানের যদি কৃষি যন্ত্রপাতির প্রয়োজনীয় মালামাল থাকে এবং আপনি যদি কাস্টমারদের সাথে সম্পূর্ণ ব্যবহার করে দোকান চালাতে পারেন।
তাহলে আপনাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না। বর্তমানে কৃষি প্রযুক্তির ব্যবসাটি খুবই লাভজনক একটি ব্যবসা। তাই আপনারা চাইলে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
১০. ফাস্ট ফুডের ব্যবসা
সাধারণত সময়ের সাথে সাথে বেকারের সংখ্যা যেন দিন দিন বেড়ে চলেছে। এই জন্য অনেক তরুণ ও ঝুঁকছে ব্যবসার দিকে। তাদের জন্য ফাস্টফুডের ব্যবসাটি হতে পারে তার একটি ব্যবসা। ভালো একটি স্থান থেকে ফাস্টফুডের দোকান দিতে পারলে দোকানে কাস্টমার আসার সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যায়।
আর দোকানে যত বেশি কাস্টমার আসবে তত বেশি আপনার লাভের পরিমাণ টা বাড়বে। তাই যদি পড়াশোনা শেষ করে চাকরি না পান তাহলে স্বল্প কিছু টাকা নিয়ে এই ফাস্টফুডের ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আপনি এই ব্যবসার রেজাল্ট দেখতে পারবেন।
আমাদের শেষ কথা
যারা বড় ব্যবসা করতে চান তারা এই বড় ব্যবসা আইডিয়া গুলোর মধ্যে যে কোন ব্যবসা করতে পারেন । আমি উপরে যে সমস্ত ব্যবসার কথা উল্লেখ করেছি এই ব্যবসা গুলোতে ঝুঁকি অনেক কম এবং লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।তাহলে দেরি না করে শুরু করে দিন ব্যবসা এবং হয়ে উঠুন স্বাবলম্বী।