ঘরে বসে কাপড়ের ব্যবসা | কাপড়ের ব্যবসার আইডিয়া

বর্তমানে অনেক ছাত্র-ছাত্রী আছে যারা অনেক লেখাপড়া করে ঘরে বসে আছেন কোন চাকরি পাচ্ছেন না। আর যখন একটা ছাত্র চাকরি না পায় পড়াশোনা শেষ করে তখন যে তার কি পরিমান কষ্ট হয় সেটা শুধু সে জানে। বেকার জীবন খুবই কষ্টের একটি জীবন। যারা বেকার আছে তারাই জানে বেকার জীবনের কষ্ট।

ঘরে বসে কাপড়ের ব্যবসা
ঘরে বসে কাপড়ের ব্যবসা

তো আপনারা যদি নিজে একটু চেষ্টা করেন তাহলে আপনারা নিজের বেকার জীবনের অবসান ঘটাতে পারেন। ছাত্র বা যেকোনো লোকই এই ব্যবসা করার মাধ্যমে নিজের বেকারত্ব কে দূর করতে পারবেন অনায়াসেই। আজকে আমি আপনাদের সাথে বলবো কাপড়ের ব্যবসা সম্পর্কে।

যারা পড়াশোনা শেষ করে বেকার বসে আছেন বা কোন চাকরি-বাকরি পাচ্ছেন না তাদের জন্য আজকে আমি এই কাপড়ের ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে কিছু বলবো। আপনি যদি নিজের ক্যারিয়ার কাপড়ের দোকানের সাথে বুড়ো তুলতে চান তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্য। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক কাপড়ের ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কেঃ

কাপড়ের ব্যবসা আইডিয়া?

যারা কাপড়ের ব্যবসা করতে চান তাদের সাথে আজকে আমি এমন কয়েকটি কাপড়ের ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বলবো। যার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজেই কাপড়ের ব্যবসা করে সফল হতে পারবেন। তাহলে চলুন দেরী না করে জেনে নেয়া যাকঃ

গজ কাপড়ের ব্যবসা 

জীবনে গজ  কাপড় পড়েনি এমন লোক হয়তো খুজলে পাওয়া যাবে না। গজ কাপড়ের প্রতি মূলত সবার ভালোবাসা একটু অন্যরকম হয়ে থাকে। তাই আপনি এক্ষেত্রে যদি কাপড়ের ব্যবসা করতে চান তাহলে গজ কাপড়ের ব্যবসা কে বেছে নিতে পারেন। এর জন্য আপনার যে জিনিসটি দরকার হবে সেটি হচ্ছে সুন্দর সুন্দর গজ কাপড়ের কালেকশন। 

আপনাকে এর জন্য গজ কাপড়ের হিসাব জানতে হবে। আপনি যদি মনে করেন যে গজ কাপড়ের ব্যবসা করবেন তাহলে আপনার তেমন বেশি পুঁজি খাটাতে হবে না। আপনাকে এর জন্য ভালো একটি স্থান ঠিক করে  দোকান দিতে হবে। যদি কসমেটিকসের কোন দোকানের পাশে আপনি দোকান দিতে পারেন তাহলে আপনার পক্ষে আরো অনেক ভালো হবে। 

আপনি এই ক্ষেত্রে ঢাকা, নর্সিংদি, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এসব স্থান থেকে গজ কাপড় নিয়ে এসে সেই কাপড় গুলো আপনি আপনার দোকানে বেচতে পারেন।এভাবে আপনি চাইলে গজ কাপড় পাইকারি তেও আসতে পারেন এবং চাইলে আপনার দোকানের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারেন। আর এইভাবে আপনি গজ কাপড়ের ব্যবসা করার মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ার খুব ভালোভাবে গড়ে নিতে পারেন। 

কাপড়ের কারচুপি করে ব্যবসা করতে পারেন?

আপনি চাইলে পোশাক কারচুপি করে ব্যবসা করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে কারচুপির ডিজাইন এবং নকশা করতে অনেক বেশি পারদর্শী হতে হবে। সহজভাবে বলতে গেলে আপনার হাতের কাজটা খুবই ভালো হতে হবে। আপনাকে যে কি করতে হবে প্রথমে কাপড় কিনে আনতে হবে।

এরপর সেই কাপড়কে আপনার হাতের কারুকার্যের কারচুপি করে সুন্দর করে ডিজাইন করতে হবে। তারপর আপনি তখন দেখতে পারবেন এই সাধারন কাপড়টি যখন অসাধারণ হয়ে যাবে তখন দাম অনেক বেড়ে যাবে। আপনি কাপড়ের কারচুপি ব্যবসাটি দুইভাবে চাইলে করতে পারেন। 

প্রথমটি হলো আপনি কাপড় কিনে এনে কারচুপি করে পাইকারি রেটে সেগুলো বিক্রি করতে পারেন আর অন্যটি হচ্ছে আপনি খুচরা রেটেও এগুলো বিক্রি করতে পারেন। তাহলে আপনি এই ব্যবসার মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ার খুব সহজেই করতে পারবেন অল্পদিনের মধ্যেই।

কাপড়ের এমব্রয়ডারির ব্যবসা?

আপনি যদি এমব্রয়ডারি করতে জানেন তাহলে আপনি এই ব্যবসাটি করতে পারেন। এর জন্য অবশ্যই আপনাকে এমব্রয়ডারী জানতে হবে। আপনি এই ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের কাপড় কিনে এনে সেখানে সুই সুতা দিয়ে এমব্রয়ডারী করে সেগুলো বিক্রি করতে পারেন। আপনি যখন একটি কাপড় সুন্দরভাবে এমব্রয়ডারী করবেন তখন দেখবেন এর একটি আলাদা সৌন্দর্য চলে আসবে।

আর তখন আপনার এই কাপড় টির মূল্য অনেক গুন বেড়ে যাবে। ইচ্ছা করলে আপনি শুধু কাপড়ের এমব্রয়ডারির ব্যবসা করে ক্যারিয়ার গঠন করতে পারেন। যার থেকে সাধারণত অন্যদের কাপড় এমব্রয়ডারি করে আয় করতে পারবেন এবং নিজের ক্যারিয়ার ভালোমতো চলবে এবং এর থেকে আপনার আয় হবে ভালোমতো।তাই কাপড়ের ব্যবসার আইডিয়ার মধ্যে এটি খুবই কার্যকরী একটি উপায়। 

কাপড়ের ব্লকের ব্যবসা 

আপনি চাইলে কাপড়ের আরেকটি সুন্দর ব্যবসা করতে পারেন সেটি হচ্ছে কাপড়ে ব্লক এর ব্যবসা। আপনি যদি একজন উদ্যোক্তা হয়ে থাকেন তাহলে কাপড়ের ব্লকের ব্যবসা করতে পারেন। ঘরে বসেই সাধারণত এই ব্যবসাটি করা যায় বলে অনেক উদ্যোক্তারাই এ ব্যবসা ঠিক করার জন্য আগ্রহ পোষন করে থাকে বর্তমানে। বর্তমান সময়ের বাটিকের উপর ব্লক করা কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। 

আপনাকে যদি এই ব্যবসা করতে হয় তাহলে ব্লকের সমস্ত কাজ আপনাকে জানতে হবে। ডিজাইন এবং রং এর ক্ষেত্রেও অনেক কিছু জানতে হবে। আপনি দাঁত দিয়ে টেবিলের ওপর রং দিয়ে ছাপ দিয়ে কাপড়ে ব্লক তৈরি করে সুন্দর সুন্দর ডিজাইন করে সেগুলো বিক্রি করতে পারেন।

আপনি যদি এই ক্ষেত্রে কাপড়ের ব্লগ ডিজাইন করার উদ্যোক্তা হয়ে যান তাহলে মার্কেটে আপনার একটি পরিচিত তৈরি হবে। যার ফলে আপনার কাপড়ের চাহিদা অনেক বেড়ে যাবে এবং আপনি এর মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।

কাপড়ের বাটিকের ব্যবসা 

সাধারণত বাটিকের সাথে সম্পৃক্ত এবং বাটিকের প্রতি ভালোবাসা নেই এমন লোক হয়তো খুবই কম আছে। তাই বাটিকের ওপর সবার আগ্রহ টা একটু বেশি থাকে। বাটিকের কাজ করতে হলে সুতা দিয়ে কাপড় বেঁধে নির্ধারিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাপড় রং এর পানিতে চুবিয়ে নিতে হয়। আর সাধারনত এই ক্ষেত্রে অনেক সময় মোম ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে থাকে।

আর সাধারণত এইভাবে কাপড়ের বাটিকের কাজ করা যায়। সাধারণত এই ব্যবসাটি করা প্রকৃতপক্ষে অনেক সহজ এবং এটি খুবই লাভজনক একটি ব্যবসা কাপড়ের ব্যবসার ক্ষেত্রে। আপনি ইচ্ছে করলে কাপড়ের থ্রি পিস, চাদরসহ সব ধরনের কাপড়ে বাটিকের কাজ করতে পারবেন।কাপড়ের বাটিকের ব্যবসাটা খুবই লাভজনক কাপড়ের পাইকারি ব্যবসার ক্ষেত্রে।

বুটিক হাউজের ব্যবসা

কাপড়ের ব্যবসার ক্ষেত্রে বুটিক হাউজ হচ্ছে বর্তমানে একটি সেরা এবং জনপ্রিয় ব্যবসা। বর্তমান সময়ে বেড়েই চলেছে বুটিক হাউজের ব্যবসার জনপ্রিয়তা। যারা সাধারণত সৃজনশীল মানুষ তাদের জন্য বুটিক হতে পারে একটি আদর্শ ব্যবসা। বর্তমান সময়ে শুধু আমাদের দেশে নাই আমাদের দেশের বাইরে বুটিকের চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। 

তাই আপনি চাইলে এই ক্ষেত্রে বুটিকের ব্যবসা শুরু করে দেশের বাইরে বুটিক রপ্তানি করতে পারেন। আর বুটিকের ব্যবসা সবসময়ই নির্ভর করবেন কাপড়ের সেলাই, কাপড়ের মান এবং বর্তমান সময়ের চমকপদ সব ডিজাইনের জন্য। 

তাই আপনি চাইলে এই বুটিকের ব্যবসাকে আপনার পেশা হিসেবে বেছে নিতে পারেন। আর এই ব্যবসাতে খরচ খুবই কম আপনি সত্তর থেকে আশি হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। কাপড়ের ব্যবসার আইডিয়ার মধ্যে এটি খুবই ভাল একটি ব্যবসা। 

কাপড় ভাড়া দিয়ে ব্যবসা

বর্তমান সময়ে মানুষ কাপড় ভাড়া দিয়ে এই ব্যবসাটা করেন খুবই লাভবান হচ্ছে। বিশেষ করে এই ক্ষেত্রে ছেলেদের বিয়ের পোশাক যেমন শেরওয়ানি, পাগড়ী নাগরা জুতা ইত্যাদি এসব। আরে সব কাপড় কেউ বেশি দাম দিয়ে কিনতে চায় না কেননা এগুলো ১ থেকে ২ দিন ব্যবহার করার জন্য মানুষ নিয়ে থাকে।বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে এসব কাপড়ের চাহিদা শেষ হয়ে যায়। 

তাই অনেকেই শুধুমাত্র অনুষ্ঠান শেষ করার জন্য এসব কাপড় নিয়ে থাকে। তাই আপনি চাইলে অল্প পুজিতে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে আপনার বেশিরভাগ কাস্টমার হবে পাত্র-পাত্রী অথবা শুটিংয়ের লোক। এই ব্যবসাতে আপনি দৈনিক হিসেবে ভাড়া রাখবেন। 

প্রথমে আপনি কাস্টমারদের কাছ থেকে কিছু টাকা জামানত নিয়ে তাদের পোশাক গুলি  দিবেন। পরে যখন ওরা আপনার কাপড় গুলো পরিশোধ করবে তখন বাদবাকি টাকা রেখে আপনি তাদের টাকা ব্যাক দিয়ে দিবেন।

আমাদের শেষ কথা

বর্তমানে কাপড়ের এই ব্যবসা গুলো করে অনেকে লাভবান হয়েছেন এবং তারা তাদের ক্যারিয়ার ও করেছেন। তাই আপনারা চাইলে যেকোনো কাজের পাশাপাশি পার্টটাইম এ এই ব্যবসা গুলো করতে পারেন। আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আর কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। 
Akash

প্রযুক্তির খবর, শিক্ষা ও ইন্সুরেন্স, ভিসার খবর, স্বাস্থ্য টিপস ও অনলাইনে আয় সম্পর্কিত তথ্যের বিরাট একটি প্ল্যাটফর্ম।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post