ইউটিউবে ভিডিও ভাইরাল করার নিয়ম ২০২১।খুব সহজেই ভিডিও হবে ভাইরাল

ইউটিউবে ভাইরালভিডিও  করার নিয়ম ২০২১


ইউটিউব (YouTube) হচ্ছে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং মাধ্যম। এছাড়াও ইউটিউব হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহত্তম সার্চ ইঞ্জিন। ইউটিউবে আমরা নানা ধরনের কনটেন্ট দেখতে পাই। এ ধরণের কনটেন্ট যারা তৈরি করেন তাদের বলা হয় Youtube Content Creator.


ইউটিউবে আপনি যেকোনো কনটেন্ট বানিয়ে আয় করতে পারেন। আজ বিশ্বের অসংখ্য মানুষই তাদের টেলেন্ট কাজে লাগিয়ে ইউটিউবের মত প্লাটফর্ম থেকে আয় করছে।


কিন্তু ইউটিউব থেকে আয় করতে হলে প্রথমে যে জিনিসটি আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে সেটি হলো ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল করা। ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল না হলে ভিডিওতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিউ আসবে না, এবং ভিউ না আসলে সাবস্ক্রাইব আসবে না।


আর তাই ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল কিভাবে করতে হয় এটা প্রত্যেক কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জেনে রাখতে হবে। 


সত্যিকার অর্থে ইউটিউবে এমন কোনো অপসন নেই যার মাধ্যমে আপনি আপনার ভিডিও ভাইরাল করে সেখানে বেশি বেশি ভিউ নিয়ে আসতে পারেন।কিন্তু এমন কিছু টেকনিক আছে যেগুলো মেইনটেইন করলে আপনার ভিডিও অবশ্যই ভাইরাল হবে এবং ভিউ আসবে। 


তাহলে চলুন বেশি কথা না বাড়িয়ে আজকের মূল বিষয় যাওয়া যাকঃ


ইউটিউবে ভিডিও ভাইরাল করার উপায়ঃ 


ইউটিউবে আপনার ভিডিও ভাইরাল বা রেঙ্ক করানোর জন্য আপনাকে কিছু স্টেপ মেনে চলতে হবে। যেমনঃ


  • চ্যানেল ক্যাটাগরি নির্বাচন
  • ট্রেন্ডিং টপিক নির্বাচন
  • কনটেন্ট কোয়ালিটি
  • সঠিক টাইটেল ব্যবহার
  • থাম্বনেইল 
  • আপলোড টাইম
  • ওয়াচ টাইম



চ্যানেল ক্যাটাগরি নির্বাচন


শুরুতে আপনাকে আপনার ভিডিও টপিক অনুযায়ী আপনার চ্যানেলের ক্যাটাগরি নির্বাচন কতে হবে। এখন ধরুন আপনার চ্যানেল এর নাম TechnologyBD, অর্থাৎ টেক রিলেটেড। কিন্তু আপনি যদি সেই চ্যানেলে রান্না নিয়ে ভিডিও আপলোড করেন তাহলে আপনার চ্যানেলের ব্র্যান্ড খারাপ হবে।


আপনি যদি Tech niche নিয়ে একটি চ্যানেল বানিয়ে থাকেন তাহলে চেষ্টা করবেন সে চ্যানেলে শুধুমাত্র টেক সম্পর্কিত ভিডিও আপলোড করতে। এতে আপনার ভিজিটর সহজে বুঝতে পারবে যে আপনার চ্যানেল কি রিলেটেড এবং আপনি কি নিয়ে ভিডিও তৈরি করেন।


আর ক্যাটাগরি অনুসারে ভিডিও বানালে ইউটিউব বুঝতে পারবে আপনি কি ভিডিও বানান, ফলে উক্ত ভিডিও দেখা মানুষের কাছে ইউটিউব থেকে আপনার ভিডিও সাজেশন দেওয়া হবে। তাই চেষ্টা করুন ১০টি ভিডিওর মধ্যে অন্তত ৯টি ভিডিও আপনার প্রধান ক্যাটাগরিতে রাখতে।


ট্রেন্ডিং টপিক নির্বাচন


আপনার ভিডিও ভাইরাল করতে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ নতুন ইউটিউবার একটি ভুল করেন, শুরুতে তারা তাদের ইচ্ছা মত টপিক বেছে নিয়ে সেটি সম্পর্কে ভিডিও বানায়। যার জন্য তাদের ভিডিও সহজে ভাইরাল হয় না।


এখন যদি আপনি এমন একটা টপিক নিয়ে ভিডিও বানান, যেটা ট্রেন্ডিং রয়েছে, তাহলে আপনার ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার সুযোগ অনেকটাই বেড়ে যাবে।


ধরুন একটি নতুন গেম আসতে চলছে, যেটার নিউজ ট্রেন্ডে আছে। আর এটা নিয়ে এখনো তেমন কেউ ভিডিও তৈরি করেননি ইউটিউবে। এসময় যদি আপনি সে টপিক নিয়ে একটি ভিডিও বানিয়ে ফেলতে পারেন, এবং ভিডিওটির যদি সব কিছু ঠিক থাকে তাহলে অবশ্যই ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার অনেকটা সুযোগ থাকবে।


একটি টপিক যখন ট্রেন্ডিং থাকে তখন সেটি নিয়ে ইউটিউব, গুগলে অনেক সার্চ করা হয়। আর তাই এ সময় সে টপিকে কোন কনটেন্ট থাকলে সেটা লোকেরা অবশ্যই দেখবে।


একটু রিসার্চ করলে আপনি এরকম অনেক ট্রেন্ড টপিক পেয়ে যাবেন।


কনটেন্ট কোয়ালিটি 


আচ্ছা, একটু আগে আমরা কথা বলছিলাম যে যদি আমরা কোন ট্রেন্ডিং বিষয়ে ভিডিও আপলোড করি তাহলে সেটি রেঙ্ক করার অনেকটা সুযোগ থাকে।


কিন্তু এর সাথে যে বিষয়টি জড়িয়ে থাকছে সেটি হচ্ছে কনটেন্ট কোয়ালিটি। হ্যাঁ, এটি অবশ্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 


আপনার তৈরি করা ভিডিও বা কনটেন্ট এর কোয়ালিটি যদি বাজে থাকে সে ক্ষেত্রে কেউ আপনার ভিডিওটি দেখতে চাইবে না। এখন আপনি যদি মোবাইল দিয়ে ভিডিও বানিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে 720p রেজুলেশনে আপনি ভিডিও আপলোড করতে পারেন, কেননা এই রেজুলেশনে ভিডিওর কোয়ালিটি মোটামুটি ভালোই থাকে। এতে চিন্তার কিছু নেই।


এখন Content Quality বলতে যে আমি শুধুমাত্র ভিডিও কোয়ালিটির কথা বুঝিয়েছি সেটা কিন্তু না, ভিডিও এর পাশাপাশি ভিডিওর মধ্যে থাকা সাউন্ড এর কোয়ালিটিও যেনো ভালো থাকে সেটি খেয়াল রাখতে হবে।


সব মিলিয়ে চেষ্টা করুন আপনার ভিডিও পারফরমেন্স যেনো ভালো থাকে ।


সঠিক টাইটেল ব্যবহার


ভিডিও কোয়ালিটি ভালো করার পর আপনাকে আপনার ভিডিওর জন্য একটি সঠিক টাইটেল নির্বাচন করতে হবে। টাইটেল মানে হচ্ছে আপনার ভিডিওর মূল বিষয়বস্তু কি সেটি লিখা।


টাইটেল এমন হতে হবে যেনো লোকেরা আপনার টাইটেল দেখে আপনার ভিডিওতে ক্লিক করতে বাধ্য হয়। সেজন্য সময় নিয়ে একটি ভালো টাইটেল নির্বাচন করুন।


থাম্বনেইল


টাইটেল এর পাশাপাশি ভিডিও থাম্বনেইল অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ একটি ভিডিওর টাইটেল এবং থাম্বনেইল দেখেই ক্লিক করে ভিডিওটি দেখার জন্য।


থাম্বনেইল বানানোর ব্যাপারে বিশেষ করে বেশি চিন্তা করতে হবে আপনাকে। আপনার কথা চিন্তা করে দেখুন, আপনি যখন ইউটিউব ওপেন করেন তখন কি দেখে ভিডিওতে ক্লিক করেন? অবশ্যই ভিডিওর টাইটেল এবং থাম্বনেইল দেখে। 


আর তাই ভিডিও থাম্বনেইল তৈরির ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিভ কিছু চিন্তা করে করতে হবে।


আপলোড টাইম


ভিডিও রেঙ্ক করানোর ক্ষেত্রে Upload Time Maintain করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সময়ে ভিডিও আপলোড করলে অনেক বেশি মানুষের কাছে আপনার ভিডিওটি পৌঁছে যাবে এবং আপনার ভিডিওতে ভালো পরিমাণে ভিউ এবং সাবস্ক্রাইব আসবে।


এক্ষেত্রে আপনি Youtube Analytics চেক করবেন, কোন সময় আপনার ভিডিও মানুষ বেশি দেখছে। যে সময় আপনার চ্যানেলে বেশি মানুষ এক্টিভ থাকবে তখন আপনি আপনার ভিডিওটি আপলোড করবেন।


এরপর যদি আপনি রেগুলার ভিডিও আপলোড করেন তাহলে আগের দিন যে সময় আপলোড করেছেন ঠিক সে সময় আপনার পরবর্তী ভিডিওগুলো আপলোড করুন।


অর্থাৎ আপনার চ্যানেলে রাত ৮-৯টা সময়ে মানুষ বেশি এক্টিভ থাকে, তাহলে আপনি আজকে এই সময় ভিডিও আপলোড করে দিলেন। এরপর যেদিন আপলোড করবেন সেদিনও একইসময়ে আপলোড করবেন আপনার ভিডিওটি।


ভিউয়ার যখন বুঝবে কোন সময়ে আপনার চ্যানেলে নতুন ভিডিও আসে, তারা তখন আওন চ্যানেলে ভিডিওর জন্য অপেক্ষায় থাকবে।


ওয়াচ টাইম


Vedio Watch Time কতটা গুরুত্বপূর্ণ এটা নিশ্চই আপনাদের নতুন করে বলার কিছু নেই। একটি ভিডিওর ওয়াচ টিমের উপর নির্ভর করে ভিডিওটা ভাইরাল হবে কি হবেনা।


ধরুন আপনি আপনার চ্যানেলে ৫ মিনিটের একটি ভিডিও আপলোড করলেন। এখন মানুষ যদি আপনার ভিডিও ৫-১০ সেকেন্ড দেখে চলে যায় তাহলে ইউটিউব ভেবে নিবে যে আপনার ভিডিওতে তেমন আহামরি কিছু নেই যে লোকেরা ভিডিওটি দেখবে।


এখন যদি আপনার ভিডিওটি লোকেরা এভারেজ ২মিনিট কিংবা তার থেকে একটু বেশি দেখে সেক্ষেত্রে ইউটিউব ভেবে নিবে যে ভিডিওতে নিশ্চই ভালো কিছু আছে। যার ফলে ইউটিউব নিজ থেকে ভিডিওটি ভাইরাল করে দিবে।


আর তাই চেষ্টা করবেন ভিডিওটিতে ভিউয়ার দের ধরে রাখতে।


বোনাস টিপসঃ


টিপস ১: ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পিছে ট্রাফিক সোর্স অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ধরনের ট্রাফিক সোর্স রয়েছে যেমনঃ


  • Google Sharch Engine
  • YouTube sharch
  • Suggestion vedio
  • Notification
  • External ইত্যাদি।


আপনার ভিডিওটিতে কোন কোন সোর্স থেকে ট্রাফিক আসছে সেটি গুরত্বপূর্ণ। তবে YouTube sharch এবং External বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভিডিও ভাইরাল এর ক্ষেত্রে।


চেষ্টা রাখবেন সব সোর্স থেকে যেনো আপনার ভিডিওটি দেখা হয়, তাহলে সহজে আপনি ভিডিওটি ভাইরাল হবে। সঠিক কীওয়ার্ড এর ব্যবহার অবশ্যই করবেন, কীওয়ার্ড রিসার্চ করে।


টিপস ২: YouTube Studio App থেকে আপনার চ্যানেলের Analytics চেক করলে বুঝলে কোন কোন সার্চ করা কীওয়ার্ড থেকে আপনার ভিডিওতে ভিজিটর আসছে।


সে কীওয়ার্ড গুলো যদি আপনার ট্যাগ হিসেবে দেওয়া না থাকে তাহলে কীওয়ার্ড গুলো আপনার ভিডিওর ট্যাগে ব্যবহার করুন। এতে আপনার ভিডিওতে আগের থেকে বেশি ভিউ আসবে।


আমাদের শেষ কথা


বন্ধুরা এই টেকনিক গুলো ফলো করলে আপনার ভিডিও সহজেই ভাইরাল হবে। সবগুলো নিয়ম মেনে ভিডিও আপলোড করুন।


আর্টিকেলটা ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন। কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন অবশ্যই। আল্লাহ হাফেজ।

 

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post